নয়াদিল্লি: ১৭ জুলাই রাষ্ট্রপতি ভোট। তার আগে নিজের নিজের শিবিরের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী নিয়ে সরকার-বিরোধী দুই শিবিরেরই ব্যস্ততা তুঙ্গে। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, হাসতে হাসতে রাইসিনা হিলের বাড়িতে যাচ্ছেন এনডিএ-র রামনাথ কোবিন্দ। কিন্তু পাশা উল্টোনো একেবারে অসম্ভব নয়। ঠিক কী ঘটলে রামনাথের জায়গায় আগামী রাষ্ট্রপতি হতে পারেন বিরোধী প্রার্থী মীরা কুমার? চলুন দেখে নিই।


রামনাথ কোবিন্দ ও মীরা কুমার। প্রথমজন জাতীয় রাজনীতিতে একেবারেই অপরিচিত, দলিত নেতা, বিহারের রাজ্যপাল। দ্বিতীয়জন দলিত নেতা জগজীবন রামের মেয়ে, লোকসভার অধ্যক্ষ ছিলেন। তা ছাড়া দুজনেই আইনজীবী, জন্মেছেনও এক বছরে- ১৯৪৫। কিন্তু মীরার পরিচিতি অনেক বেশি হলেও সোজাসাপটা ভোটের হিসেবে তাঁর থেকে অনেক এগিয়ে রামনাথ। তাঁর ঝুলিতে বিজেপি ও সহযোগী দলগুলির ভোট তো আছেই, এছাড়াও রয়েছে সংযুক্ত জনতা দল, বিজেডি, টিআরএস, এআইএডিএমকে ও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ভোট। সব মিলিয়ে মোট ভোটের ৬০ শতাংশের বেশি, যা তাঁর জয়ের পক্ষে যথেষ্ট। উল্টোদিকে মীরার পক্ষে রয়েছে কংগ্রেস, বিএসপি, এসপি সহ কয়েকটি দলের ভোট। যা কষ্টেসৃষ্টে ছোঁবে ৪০ শতাংশ।

ভোট হতে এখনও সপ্তাহতিনেক। আর রাজনীতি তো বরাবরই চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার ময়দান। রাজনীতিকরা যখন তখন দল বদলে ফেলেন, নিজেদেরই দেওয়া কথা ফিরিয়ে নেন। তাই যদি কোবিন্দকে সমর্থনের কথা জানিয়ে দেওয়া সবকটি অ-এনডিএ দল নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে মীরাকে সমর্থন করে, তাহলে কোবিন্দের জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।

তা ছাড়া মীরা বরাবরই বড় মাঠের খেলোয়াড়। পিছিয়ে থেকে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে তাঁর সুনাম রয়েছে। ৮৫-তে নিজের প্রথম সাধারণ নির্বাচনেই উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর থেকে তিনি জেতেন বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী ও এলজেপি প্রধান রামবিলাস পাসোয়ানকে হারিয়ে। যদি সেই সুনাম মীরা ধরে রাখতে পারেন, তবে রাষ্ট্রপতি হতে পারেন তিনি।

১৯৬৯-এর রাষ্ট্রপতি ভোটের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন নীলম সঞ্জীব রেড্ডি। অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির সমর্থন ছিল তাঁর সঙ্গে। কিন্তু শেষ হাসি হাসেন নির্দল প্রার্থী ভি ভি গিরি, যাঁর মাথায় ছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর আশীর্বাদের হাত। কংগ্রেস সাংসদ, বিধায়কদের কাছে তিনি আবেদন করেন ‘বিবেকের কথা শুনে ভোট দিতে’। যাই হোক, রেড্ডিকে হারিয়ে রাষ্ট্রপতি হন গিরি। হতে পারে, এবারেও তেমনই কিছু ঘটে গেল, আর কোবিন্দের বদলে মীরা ৫ বছরের জন্য ঠিকানা করে ফেললেন রাইসিনা হিলকে।