নয়াদিল্লি: দাবি অনুযায়ী উৎসাহ ভাতা দিচ্ছিল না ওলা। খেপে গিয়ে সংস্থাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য এক যাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ৫ কোটি টাকা দাবি করে চালক। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর নাটকীয়ভাবে ওই যাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ৪ অপহরণকারী। তবে মূল অভিযুক্ত পলাতক।


পুলিশ সূত্রে খবর, এ মাসের ৬ তারিখ দক্ষিণ দিল্লিতে যাওয়ার জন্য ক্যাব বুক করেন পূর্ব দিল্লির প্রীত বিহার অঞ্চলের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক শ্রীকান্ত গৌর। কিন্তু ক্যাব চালক তাঁকে নিয়ে চলে যায় দাদরিতে। সেখানে বাকি তিনজন অপহরণকারী আসে। তারা শ্রীকান্তকে পণবন্দি করে। ক্যাব সংস্থার দফতরে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ কোটি টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। অপহৃত চিকিৎসকের ভিডিও তুলে তাঁর পরিবারের লোকজন এবং ক্যাব সংস্থার দফতরে পাঠায় অপহরণকারীরা। তারা বিভিন্ন সিম কার্ড ও নম্বর থেকে ফোন করছিল। ফলে তাদের অবস্থান বুঝতে পারছিল না পুলিশ।

অপহৃতকে উদ্ধারের চেষ্টায় সংশ্লিষ্ট ক্যাব সংস্থার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে অপহরণকারীদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ আধিকারিকরা। তাঁরা বলেন, যাত্রী অপহৃত হওয়ায় দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ দেওয়া হবে। ২০০ জন পুলিশকর্মী তল্লাশি শুরু করেন। অবশেষে মেরঠের দাউরালা গ্রামে অপহরণকারীদের খোঁজ মেলে। দিল্লি ও মেরঠের পুলিশ একযোগে অভিযান চালায়। ১৬ তারিখ অপহরণকারীরা অল্পের জন্য পালিয়ে যায়। তবে ক্যাব চালক সুশীল ও তার ভাই অনুজকে চিহ্নিত করে পুলিশ। জানা যায়, তারা দাদরির বাসিন্দা। তাদের পরিবারের লোকজনকে তল্লাশি করার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে তল্লাশি চালাতে থাকে পুলিশ।

বুধবার রাতে পুলিশ খবর পায়, মেরঠের পর্তাপুর গ্রামের একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে অপহৃত চিকিৎসককে। বাড়িটি ঘিরে ফেলেন পুলিশকর্মীরা। শুরু হয় গুলির লড়াই। অন্তত তিন-চার রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়। এক অপহরণকারীর উরুতে গুলি লাগে। চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সুশীল ও অনুজ এখনও অধরা। অপহৃত চিকিৎসককে উদ্ধার করে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অনুজও তার দাদার মতোই ওলার ক্যাব চালক ছিল। সে ভাতা না পেয়েই সংস্থাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার ছক কষে। সুশীল প্রথমে উবেরের চালক হিসেবে আবেদন করে। কিন্তু প্রয়োজনীয় নথি না থাকায় তার আবেদন বাতিল হয়ে যায়। নথি জাল করে সে লাইসেন্স জোগাড় করে। এরপর ওলার চালক হিসেবে চাকরি পায়। শ্রীকান্তই তার প্রথম যাত্রী ছিলেন। তাঁকেই অপহরণ করে সে।