চণ্ডীগড়: ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান গুরমীত রাম রহিম সিংহ জেলে গেলেও তার অনুগামীদের গুন্ডামি এড়াতে ও শান্তি বজায় রাখতে সতর্কতা অবলম্বন হিসেবে হরিয়ানার কয়েকটি উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার মেয়াদ বৃদ্ধি করে বুধবার পর্যন্ত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।


হরিয়ানা প্রশাসনের তরফে মঙ্গলবার জানানো হয়, রাজ্যের অধিকাংশ জায়গায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা চালু থাকলেও, সাতটি উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এই সাত জেলা হল— অম্বালা, কুরুক্ষেত্র, সিরসা, ফতেবাদ, জিন্দ, হিসার ও কৈথাল। আগামীকাল দুপুর ১২টার পর তা চালু করা হতে পারে।



গত শুক্রবার, ধর্ষণের ঘটনায় গুরমীত রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচকুলার বিশেষ সিবিআই আদালত। এরপরই রাস্তায় নেমে আসে কয়েক লক্ষ ডেরা সমর্থক। গোটা হরিয়ানায় হিংসার আগুন জ্বলে ওঠে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাঁচকুলা ও সিরসা। ৩৮ জনের মৃত্যু হয়। কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়।


এই প্রেক্ষিতে সোমবার শাস্তি ঘোষণার আগে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে হরিয়ানা প্রশাসন। উত্তেজনাপ্রবণ জেলাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ডেরা ঘিরে ফেলে সেনা ও আধা-সামরিক বাহিনী। রাস্তায় ফ্ল্যাগ-মার্চ করে ফৌজ। ভুয়ো খবর ও জল্পনা এড়াতে সব ধরনের মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাকে মঙ্গলবার পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।



এদিকে, শুক্রবারের পর থেকে হরিয়ানা ও পঞ্জাবের হিংসা-কবলিত অঞ্চলে ধীরে ধীরে শান্তি ফিরে আসছে। স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। দুই সাধ্বীকে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত রাম রহিমকে সোমবার ২০ বছরের কারাবাসের সাজা দেন বিচারক। প্রশাসন আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় দুই রাজ্য থেকে গত ২৪-ঘণ্টায় নতুন কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি।


পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এদিন সাত-ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়েছিল। তখনও পরিস্থিতি মোটের ওপর স্বাভাবিক ছিল বলে দাবি হরিয়ানা ও পঞ্জাব সরকারের। যদিও, এখনও দুই রাজ্যেই হাই-অ্যালার্ট জারি রয়েছে। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি ঠিক রাখতে জারি করা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাও।



হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টার রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। বিশেষ করে, ডেরা অনুগামীদের আর্জি করেছেন, কোনওপ্রকার হিংসায় মদত না দিতে। একইভাবে মানুষের প্রতি শান্তি বজায় রাখতে বলেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংহ।