নয়াদিল্লি:#জিগনেশ আরও বলেছেন, 'দুর্নীতি, দারিদ্র, বেকারির মতো জ্বলন্ত সমস্যা গুলির দিক থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে ঘর ওয়াপসি, লাভ জেহাদ, গরু-র মতো বিষয়গুলিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে। আমরা লাভ জেহাদে নয়, ভালোবাসায় বিশ্বাসী,আমরা ভ্যালেন্টাইন্স ডেও পালন করি'।


#'জিগনেশ বলেছেন, গুজরাতে আসন সংখ্যা ৯৯-তে নামিয়ে এনে আমরা ওদের অহংকার ভেঙে দিয়েছে। এজন্যই আমাদের নিশানা করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, যতই আক্রমণ হোক, আমরা সংবিধান আঁকড়ে থাকব'। 

#পুলিশের অনুমতি না থাকলেও সংসদ ভবন মার্গে দুপুর সোয়া একটা নাগাদ কৃষক আন্দোলনের নেতা অখিল গগৈ, জেএনইউ-র পড়ুয়া শেহলা রশিদ, উমর খালিদ এবং ভীম আর্মির বিনয় রতন সিংহকে নিয়ে পৌঁছে যান জিগনেশ। সভায় শেহলা বলেন, এই সভার মাধ্যমে দেশের তরুণদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করতে চলেছেন তাঁরা। তিনি চন্দ্রশেখর আজাদকে জেলে আটক রাখা নিয়ে অভিযোগ করেন, 'যেখানে তরুণ নেতাদের জেলে ঢোকানো হচ্ছে, সেখানে উত্তরপ্রদেশের সরকার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা গুটিয়ে নিচ্ছে'।
জমায়েতে প্রশান্ত ভূষণ ‘যুবা হুঙ্কার র‌্যালি’-তে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, 'আমরা ধর্মনিরপেক্ষতাকে বেছে নিয়েছি। কারণ, বৈচিত্রই আমাদের শক্তি। কিন্তু এখন আক্রমণের মুখে পড়েছেন দলিত ও সংখ্যালঘুরা। জরুরি অবস্থায় সময় আমার গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছিল। এখন সংস্কৃতিই আক্রমণের মুখে পড়েছে'।
জমায়েতে ভাষণ দেন জেএনইউ-র ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়া কুমারও। তিনি বলেছেন, 'কোনও বিশেষ ধর্ম বা সম্প্রদায় নয়, সংবিধানকে রক্ষার জন্যই আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। ওরা বোঝানোর চেষ্টা করবে, আমরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আমরা তা নই। আল্লা ও রামের মধ্যে যদি কোনও লড়াই বাধে তাহলে নাথুরাম গডসেই জয়ী হবে'।
কানহাইয়া কুমার বলেন, কোনও নির্দিষ্ট সংগঠনের বিরুদ্ধেও আমাদের লড়াই নয়, এই লড়াই সামাজিক অসমতার বিরুদ্ধে।
অখিল গগৈ বলেছেন, 'নতুন প্রস্তাবিত নাগরিক বিলের মাধ্যমে অসমকে বিজেপির উপহার হবে, ২ কোটি হিন্দু বাংলাদেশি। এই মানুষরা বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে শক্তিশালী করে তুলবে বিজেপি-আরএসএসের হিন্দু-রাষ্ট্রের ধারণা'। 


পুলিশ অনুমতি না দেওয়ার পরও দিল্লির যন্তরমন্তরে সভা করার ব্যাপারে অনড় দলিত নেতা তথা গুজরাতের নির্দল বিধায়ক জিগনেশ মেভানি। এই সভায় আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত লোকজন অংশ নেবেন। কোনও রাজনৈতিক দলের বিশেষ কোনও নেতা হাজির থাকবেন না। সংসদ মার্গে প্রস্তাবিত জিগনেশের 'যুবা হুঙ্কার র‌্যালি' ঘিরে প্রচুর সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান। উল্লেখ্য, এনজিটি যন্তরমন্তরে কোনও সভা না করার নির্দেশ দিয়েছে।
কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ব্যর্থতা এবং দক্ষিণপন্থী হিংসার প্রতিবাদে এই সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভা থেকে দলিত সংগঠন ভীম আর্মির প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রশেখর আজাদের মুক্তির পাশাপাশি শিক্ষা, কর্মসংস্থান, জীবনযাপনের অধিকার এবং লিঙ্গ সমতার মতো দাবিগুলি উত্থাপন করা হতে পারে।
গত বছরের জুন মাসে হিমাচল প্রদেশ থেকে ৩০ বছরের আজাদকে গ্রেফতার করা হয়। উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর জেলায় ঠাকুর-দলিত সংঘর্ষের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত তিনি।
তাঁর সভার অনুমতি না দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ জিগনেশ। কনট প্লেসে নিজের গাড়িতে বসে মেভানি বলেছেন, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে শান্তিপূর্ণ সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা সামজিক ন্যায় ও যুব সম্প্রদায়ের ইস্যুগুলি তুলতে চাই।
জিগনেশ আরও বলেছেন, আমাকে নিশানা করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। সংবিধানের নিয়ম মেনেই সভা করছি। এরপরও আমাদের বলতে দেওয়া হচ্ছে না।
দিল্লির পুলিশ কমিশনার গতকাল ট্যুইট করে জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ আয়োজকদের সভা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
জানা গেছে, এই সভায় দিল্লির বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলির ছাত্রসমাজের একটা বড় অংশ, মহিলা গোষ্ঠী, শিক্ষক সংগঠন ও জিগনেশের সঙ্গে যুক্ত আন্দোলনকারীরা যোগ দিতে পারেন।
মহারাষ্ট্রের পুনেতে সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনায় পুলিশ জিগনেশের বিরুদ্ধে প্ররোচনামূলক ভাষণ দেওয়ার জন্য এফআইআর দায়ের করেছে। ভডগামের বিধায়ক দাবি, দেশের লক্ষ লক্ষ দলিতদের হুঁশিয়ারি দিতে কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত দলিত নেতাকে নিশানা করেছে।
যন্তরমন্তরে সভার প্রস্তুতি তুঙ্গে। মঞ্চ তৈরি হয়েছে, সাউন্ডসিস্টেম, চেয়ারও প্রস্তুত। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতি মোহিত পান্ডে বলেছেন, সভা হবে। কিন্তু কোনও মিছিল হবে না।