নয়াদিল্লি: জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে পারেনি, এই অভিযোগে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে তুমুল আক্রমণ পি চিদম্বরমের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তথ্য পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০১৪-য় অশান্ত রাজ্যে হিংসায় নিহত সন্ত্রাসবাদী ও নাগরিকের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১১০ ও ২৮। ২০১৭-য় তা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ২১৮ ও ৫৭। এই তিন বছরে হিংসায় নিহত নিরাপত্তা জওয়ানের সংখ্যাও ৪৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৩। অশান্ত জম্মু ও কাশ্মীরে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের মনোভাবকে 'কঠোর', 'বাহুবলী', 'যুদ্ধং দেহী, 'সমরমুখী' আখ্যা দিয়ে তার তীব্র সমালোচনা করেন ইউপিএ জমানার মন্ত্রী। এতে ইতিবাচক ফলের বদলে সমস্যা আরও জটিল হয়েছে বলে দাবি তাঁর।
হিংসাকবলিত রাজ্যে সমাধান সূত্রের খোঁজে দীনেশ্বর শর্মাকে কেন্দ্রের মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করা হলেও উপত্যকার সংশিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ তা প্রাক-নির্বাচনী চমক বলে খারিজ করেছে বলেও দাবি করেন চিদম্বরম। ট্যুইট করেন, গুজরাত ভোটের মুখে সরকার বিশেষ দূত হিসাবে পাঠাল দীনেশ্বর শর্মাকে। কিন্তু তাঁকেও কতদূর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, স্পষ্ট নয়। পরে শোনা গেল, যে কেউ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেই কথা বলবেন তিনি। সমস্যাটা সেখানেই। আলোচনায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ডাকাই সামনের দিকে এগনোর রাস্তা। দুর্ভাগ্যের বিষয়, বিভিন্ন পক্ষ তাঁর নিয়োগকে প্রাক-নির্বাচনী গিমিক হিসাবেই দেখছে, ভালো মানুষটাকে প্রত্যাখ্যান করেছে পুরোপুরি।
১৯৮৯ থেকে শুরু হওয়া বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের জেরে কয়েক হাজার প্রাণ চলে যাওয়ায় জম্মু ও কাশ্মীরে রাজনৈতিক সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার লক্ষ্যে প্রয়াস চালানোর মধ্যেই বিচক্ষণতার পরিচয় মিলবে বলে মত চিদম্বরমের।
পাশাপাশি কংগ্রেসের আরেক প্রথম সারির নেতা কপিল সিবালও ট্যুইট করেছেন, জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাগাড়ম্বর অসার প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, প্রায় প্রতিদিনই মরছে সেনা জওয়ান, পুলিশকর্মীরা। এই প্রাণহানি বন্ধ হবে কবে?
চিদম্বরম বরাবরই কাশ্মীরে স্বশাসন দেওয়ার কট্টর সমর্থক। সম্প্রতি তিনি সওয়াল করেন, কাশ্মীরে বৃহত্তর স্বশাসন দেওয়ার কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত, কোথায় কোথায় তা দেওয়া যায়, খতিয়ে দেখা হোক। স্বাভাবিক ভাবেই প্রবল বিতর্ক হয় তাঁর বক্তব্যে।