নয়াদিল্লি:  তৃণমূল-বিজেপি সংঘাতের আবহে দিল্লিতে মোদী-মমতার বৈঠক। এই বৈঠকে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে বকেয়া বরাদ্দ মেটানোর দাবিতে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীদের কটাক্ষ, এ সবই আসলে, সারদা-নারদ থেকে তৃণমূল নেতাদের বাঁচানোর চেষ্টা। পাল্টা এক সুরে বিজেপি ও তৃণমূল। তারা বিরোধীদের কটাক্ষকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।

নোটবাতিলকাণ্ড, চিটফান্ড ইস্যু থেকে শুরু করে হালে রামনবমী উপলক্ষ্যে অস্ত্র নিয়ে মিছিল। বিভিন্ন ইস্যুতে বিজেপির সঙ্গে সংঘাতে তৃণমূল। এই আবহের মাঝেই, সোমবার, দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আট মাস পরে নয়াদিল্লিতে ফের একান্ত বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন, সকাল ৯.২০ তে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সাড়ে ন’টা থেকে মোদী-মমতার একান্ত বৈঠক শুরু হয়।চলে প্রায় কুড়ি মিনিট। বৈঠকে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে বকেয়া কেন্দ্রীয় বরাদ্দ মেটানোর জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি,  বিভিন্ন প্রকল্প মিলিয়ে, রাজ্যের প্রাপ্য মোট ১০ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

যদিও, সিপিএমের দাবি, উন্নয়ন গৌণ, বৈঠকের আসল উদ্দেশ্যে জেলযাত্রা বাঁচানো।

সিপিএম-এর পলিটব্যুরো সদস্য, মহম্মদ সেলিমের দাবি, নারদা-সারদায় দলের নেতাদের বাঁচাতেই এখানে আসা। বরাদ্দ নিয়ে বলার থাকলে সচিবদের নিয়ে আসতেন।

আট মাস পর মোদী-মমতা বৈঠকের মধ্যে অন্য গন্ধ পাচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেসও।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর দাবি, চিটফান্ডকাণ্ডে দলের নেতাদের বাঁচানোর চেষ্টা। রাজ্যে গর্জন বর্ষণ করেন। দিল্লি এলে শান্ত হয়ে যান। বরাদ্দ নিয়ে বলার থাকলে অর্থমন্ত্রীকে কেন আনলেন না? জেটলির সঙ্গে কেন দেখা করলেন না?

যদিও, বিরোধীদের কটাক্ষকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। বিজেপিরও বক্তব্য, সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা ঠিক নয়।

কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী, বাবুল সুপ্রিয়র এপ্রসঙ্গে বক্তব্য, দু’জনেই সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। আমি বলব উন্নয়নের স্বার্থে এমন বৈঠক আরও ঘন ঘন হওয়া উচিত। এর সঙ্গে সারদা-নারদের সম্পর্ক বের করা ঠিক নয়।

উত্তরপ্রদেশে বিপুল জয়ের পর মিশন বাংলাকে সামনে রেখে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। সেই ঝাঁঝ কি এই বৈঠকের পরও অব্যাহত থাকবে? নারদ-সারদা নিয়ে সিবিআই তদন্তের গতি বাড়বে না কমবে? এসবের উপর যেমন নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের, তেমনই মমতা-মোদীর বৈঠকের পর রাজ্য তার বকেয়া বরাদ্দ পায় কি না, সেটাও দেখার বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।