নয়াদিল্লি: সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, এ খবরের প্রতিক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বললেন, কেউ এক্ষেত্রে বেআইনি কাজে জড়িত প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদেশি ব্যাঙ্কে পাচার করা বেআইনি টাকার বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদী সরকার অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবি। তার মধ্যেই তিন বছরের নিম্নমুখী প্রবণতায় ছেদ ঘটিয়ে ২০১৭-য় সুইস ব্যাঙ্কগুলিতে ভারতীয়দের সঞ্চিত অর্থ ৫০ শতাংশের বেশি বেড়ে ১.০১ বিলিয়ন সিএইচএফ বা ৭ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। তুলনায় সুইস ব্যাঙ্কের সব বিদেশি ক্লায়েন্টের জমানো মোট অর্থ প্রায় ৩ শতাংশ বেড়ে ১.৪৬ ট্রিলিয়ন সিএইচএফ বা ১০০ লক্ষ কোটি হয়েছে।
সুইত্জারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সুইস ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক এই পরিসংখ্যান দিয়েছে।


দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় ২০১৮-র ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য সুইত্জারল্যান্ড চলতি আর্থিক বছর শেষেই ভারতকে দেবে বলে জানান গয়াল।
গয়ালের বক্তব্য, যেসব তথ্য বেরিয়েছে, সবই আমাদের কাছে আসবে। তাহলে কী করে ধরে নেওয়া যাবে যে, এই অর্থের পুরোটাই কালো, বেআইনি লেনদেনের ফসল? মিডিয়া রিপোর্ট উদ্ধৃত করে এই অর্থের প্রায় ৪০ শতাংশ লিবারালাইজড রেমিট্যান্স স্কিম (এলআরএস) থেকে আসা বলে জানান তিনি।স্কিমটি চালু করেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। এর আওতায় কেউ বছরে আড়াই লক্ষ মার্কিন ডলার পর্যন্ত পাঠাতে পারেন।
গয়ালের ঘোষণা, সব তথ্য হাতে পাব। যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হন, সরকার কঠোর পদক্ষেপ করবে।

এই বিতর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলিও মুখ খুলেছেন। তাঁর দাবি, সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের যে টাকা জমা পড়েছে, তার পুরোটাই কালো টাকা নয়।
জেটলিরও দাবি, বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সুইতজারল্যান্ড। বিভিন্ন দেশের অনুরোধ অনুসারে তথ্য যোগানের জন্য এই সব চুক্তি। তথ্য প্রকাশ সংক্রান্ত দেশের আইন সংশোধন করে সুইতজারল্যান্ড ভারতের সঙ্গেও চুক্তি করেছে। সঠিক সময় থেকেই এ ব্যাপারে তথ্য ভারতের হাতে আসবে।
জেটলির দাবি, আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে এই তথ্য আসতে শুরু করবে। বেআইনিভাবে যাঁরা টাকা রেখেছেন তাঁরা জানেন যে, এটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। এরপরই তাঁর নাম প্রকাশ্যে আসবে এবং ভারতের কঠোর কালো টাকা আইনের ধারায় পড়তে হবে তাঁকে।

জেটলি বলেছেন, করছাড়ের স্বর্গরাজ্য হিসেবে যে পরিচিতি গড়ে উঠেছে সেই ভাবমূর্তি থেকে বেরিয়ে আসতে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নিয়েছে সুইতজারল্যান্ড। তথ্য উন্মক্ত করার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সুইতজারল্যান্ড। তাই ওই দেশ করফাঁকিবাজদের আদর্শ গন্তব্য আর নেই।
ওখানে গচ্ছিত সমস্ত টাকা কর ফাঁকি দেওয়া অর্থ বা কয়েক দশক আগে সুইতজারল্যান্ড বেআইনি অর্থ গচ্ছিত রাখার ক্ষেত্রে যা ছিল, এখনও তাই রয়েছে, এমন ধরে নেওয়াটা ভুল হবে বলেও মন্তব্য করেছেন জেটলি।