এলাবাহাদ: বিবাহ বিচ্ছেদের আগেও যদিও কোনও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লেও সন্তানের আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না মায়েদের। ঐতিহাসিক এক রায়ে এমনটাই জানাল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। মহামান্য আদালতের সাফ কথা, বেড়ে ওঠার পথে মায়ের স্নেহ, উপস্থিতি না পেলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে শিশুদের উপর।


বিবাহ বিচ্ছেদ না করেই অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছেন স্ত্রী সংযুক্তা, তাই ছেলে আনমোলের আইনি অধিকার পাওয়ার তিনি যোগ্য নন বলেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাম কুমার গুপ্ত নামে এক ব্যক্তি। তিনি হলফনামায় দাবি করেন, অপরিচিতের ঘরে সন্তানের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত তিনি, তাই ছেলেকে তাঁর মায়ের কাছে যাতে না পাঠাতে হয় সেটা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন ওই ব্যক্তি।

আদালত যদিও তাদের পর্যবেক্ষণে ওই ব্যক্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে। বরং পাল্টা হিসেবে বিচারপতি জেজে মুনির বলেছেন, ‘আইন বা সমাজের চোখে কোনও মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদের আগেই অন্য সম্পর্কে যুক্ত হওয়াটা হয়তো অনেকেই সহজে মেনে নিতে পারে না, কিন্তু কোনও শিশুকে তার মায়ের থেকে এভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়াটাও অনুচিত। বেড়ে ওঠার পথে মায়ের সাহচর্চ না পেলে শিশুর মানসিকতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’

আইনি প্রক্রিয়ার মাঝে সংযুক্তাকে দাবি করেন, রাম বাবা হিসেবে তাঁর দায়িত্বভার মোটেই ভালোভাবে বহন করেননি। তাঁকেও একাধিকবার গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হতে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মানিয়ে নিয়ে চলার চেষ্টা করেও শেষমেশ ব্যর্থ হন। তারপরই তিনি অন্য সম্পর্কে যুক্ত হন। যদিও এখনও তাঁর স্বামীর সঙ্গে আইনত বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি।

চলতি শতাব্দীর শুরুর দিকেই সুপ্রিম কোর্ট তাদের এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিয়েছিল, দ্বিতীয়বার বিবাহ করলেও প্রথম পক্ষের সন্তানের আইনি অধিকার মায়েদেরও সমানভাবেই প্রাপ্য। যদিও বিবাহ বিচ্ছেদের হওয়ার আগেই কোনও মহিলা সংসার থেকে আলাদা থাকতে শুরু করলে সেক্ষেত্রে সন্তানের আইনি অধিকার মায়েদেরও থাকবে কি না, তা নিয়ে ছিল জটিলতা।