শ্রীনগর:  কাশ্মীরের তরুণ ফুটবলার মজিদ আর্শিদ খান, সাতদিন আগে যোগ দিয়ে ছিলেন লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি সংগঠনে। মায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি ফিরে এলেন জীবনের মূলস্রোতে। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ট্যুইট করে বলেছেন, মায়ের ভালবাসাই মজিদকে ফিরিয়ে এনেছে। তিনি গতকাল রাতে দক্ষিণ কাশ্মীরে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে অস্ত্র-সহ আত্মসমর্পণ করেন। আজ সকালে তাঁকে একটি অজানা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন তিনি রয়েছেন পুলিশি হেফাজতে।



গত ১০ নভেম্বর, ফেসবুকে ঘোষণা করে অনন্তনাগের বাসিন্দা মাজিদ যোগ দেন জঙ্গি সংগঠনে। যে পোস্টটি মজিদ তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করেছিলেন, সেখানে তাঁর কাঁধে একটি একে-৪৭ দেখা যাচ্ছিল। প্রত্যেকেই তাঁকে এক নিমেষে চিনতে পারেন, কারণ, তিনি এলাকার একজন জনপ্রিয় ফুটবলার ছিলেন। এছাড়া একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গেও যোগ ছিল মজিদের। তবে জঙ্গি কার্যকলাপে ভেসে যাওয়ার আগে, তাঁকে জীবনের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে পেরে পুলিশ এবং প্রশাসন, দুপক্ষই এখন ভীষণ খুশি। মজিদকে উদাহরণ হিসেবে সকলের সামনে ব্যবহার করে কাশ্মীরের এক প্রবীণ পুলিশ আধিকারিক মন্তব্য করেছেন, উপত্যকার সমস্ত তরুণের মজিদকে দেখে শিক্ষা নেওয়া উচিত। অস্ত্র ছেড়ে নিজের মায়ের কোলে প্রত্যেকের ফিরে আসা উচিত। জীবনে অনেক কিছু করার আছে। জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থেকে সেই সমস্ত কাজ করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।



মা-বাবার একমাত্র সন্তান মজিদ। ছেলের আচমকা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার খবরে স্বাভাবিক ভাবেই ধাক্কা খান পরিবারের সদস্যরা। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই মজিদের লস্কর-ই-তৈবার বিভিন্ন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে গিয়েছিল। অন্তনাগ জেলার ডিগ্রি কলেজে কলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মজিদ। তবে মাস খানেক আগে জহর নিসার নামে তাঁর এক বন্ধু নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হওয়ার পরই পুরো বদলে যায় এই তরুণের জীবন।



ঘরের ছেলে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়ার পরই পরিবারের সদস্যরা সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে একাধিক পোস্টে ছেলেকে ঘরে ফিরে আসার জন্যে আর্জি জানাতে থাকেন।  এর আগে গত ১৪ অগাস্ট মজিদকে জঙ্গি মুজামিলের শেষকৃত্যে একে-৪৭ হাতে হাজির থাকতে দেখা গিয়েছিল। এরপর কাশ্মীরের আইজি মুনির খান আশ্বাস দেন, মজিদের মতো এই রকম আরও তরুণ যাঁরা আছেন, তাঁদের জীবনের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্যে তাঁরা বদ্ধপরিকর। অবশেষে ফিরে এলেন মজিদ।