নয়াদিল্লি: মায়েরা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিন, চাইছে রাজস্থান সরকারের শিক্ষা দপ্তর। নোটিস দিয়ে এ কথা জানাল জানাল তারা। নোটিসে বলা হয়েছে, ১৮ নভেম্বর রাজ্যব্যাপী সরকারি স্কুলে অভিভাবক-শিক্ষক বৈঠকে বাধ্যতামূলক ভাবে হাজির থাকতে হবে মায়েদের। অনিবার্য কারণে মায়েরা না পারলে ঠাকুমা, দিদিমা বা মাসি, পিসিদের কেউ এলেও হবে। তবে একজন মহিলা আত্মীয়কে আসতেই হবে।
দিন কয়েক আগে রাজস্থানের এই শিক্ষা দপ্তরই 'স্বাস্থ্য ভাল রাখতে' ঘরে গম পেষাইয়ের পরামর্শ দিয়েছিল মেয়েদের। তাই এই নোটিসে জল্পনা চলছে, তবে কি দপ্তরের কর্তাদের মহিলাদের প্রতি মনোভাব রাতারাতি বদলে গেল?
রাজস্থানের গ্রামীণ এলাকায় একে নারী স্বাক্ষরতার হার কম, তার ওপর সমাজটা পুরুষতান্ত্রিক হওয়ায় ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা সহ যাবতীয় 'গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্মে' সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছেলেদের হাতেই থাকে। সে কথা মাথায় রেখে সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা বেশ কিছুদিন ধরেই মায়েদের পেরেন্টস-টিচার্স মিটে আসার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন মায়েদের। তাঁদের কোন অভিভাবকরা আসছেন, তার রেকর্ড রাখতে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন মহল বলছে, শিশুর প্রথম শিক্ষক তার মা। এই সিদ্ধান্তে তিনিই স্বীকৃতি পাচ্ছেন।
তবে পর্যবেক্ষকদের মত, শিক্ষা দপ্তরের নোটিস থেকেই রাজস্থানে মহিলা শিক্ষার বেহাল দশার ছবিটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি মায়েদের পেরেন্টস-টিচার্স মিটে আসা বাধ্যতামূলক করে নোটিস দেওয়ার মধ্য দিয়ে রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের প্রবল বৈষম্যের দিকটিও ফুটে উঠেছে। বেসরকারি স্কুলে পেরেন্টস-টিচার্স মিটে মায়েরাই আসেন, কারও বাবা এলে মনে করা হয়, সেই পড়ুয়ার অভিভাবকদের মধ্যে হয়তো কোনও সমস্যা আছে।
সরকারি স্কুলে নিয়মিত শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের যোগাযোগই হয় না। এই শিক্ষাবর্ষ থেকেই সরকারি স্কুলে পেরেন্টস-টিচার্স মিট চালু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত দুটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে এসেছেন বাবারাই।