লখনউ: ‘সাইকেল’ নিয়ে যাদব-পরিবারের ধুন্ধুমার অব্যাহত।


একদিকে, দলীয় প্রতীক ‘সাইকেল’-কে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ধরে রাখতে যখন দিল্লি গিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ বাবা মুলায়ম সিংহ যাদব, সেখানে ‘সাইকেল’ পেতে লখনউতে অনুগামীদের হলফনামা সংগ্রহে ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী-পুত্র অখিলেশ যাদব।


সূত্রের খবর, দলের বহু বিধায়ক, বিধান পরিষদীয় সদস্য, সাংসদদের হলফনামা নিয়ে ভাই রামগোপাল যাদবকে সঙ্গে নিয়ে মুলায়ম এদিন নয়াদিল্লি রওনা দেন দিল্লির উদ্দেশে, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করতে।


জানা গিয়েছে, দলীয় প্রতীকের দাবি করতে সেই হলফনামা পেশ করা ছিল লক্ষ্য। তবে, সন্ধ্যেবেলা কমিশনের সঙ্গে দেখা না করেই ফিরে আসেন। মুলায়ম শিবিরের তরফে জানানো হয়, তারা কমিশনের কাছে আরও সময় চেয়েছে। যদিও, কমিশন জানিয়েছে, মুলায়ম সিংহের সঙ্গে এদিন কোনও অ্যাপয়েন্টমেন্টই ছিল না।


গত সপ্তাহে জাতীয় সম্মেলন ডেকে মুলায়মকে দলের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে নিজে দায়িত্ব নেন অখিলেশ। একইসঙ্গে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে তিনি সরিয়ে দেন রামগোপালকে। পাল্টা হিসেবে, অখিলেশ-ঘনিষ্ঠ রামগোপাল যাদব এবং নরেশ অগ্রবালকে বহিষ্কার করেন মুলায়ম।


এদিকে, মুলায়ম যখন কমিশনের দ্বারস্থ হন, তখন পাল্টা ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত ছিল অখিলেশ শিবির। এদিন ৫ কালিদাস মার্গের বাসভবনে অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী।


জানা গিয়েছে, অখিলেশও দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের হলফনামা সংগ্রহ করছেন। সম্ভবত, আগামী দু-একদিনের মধ্যে তিনিও বাবার মত ‘সাইকেল’-এর দাবি নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হতে পারেন।


বাবা-ছেলের দ্বন্দ্বের মাঝে ‘সাইকেল’-এর ভাগ্য নির্ধারণ করতে সক্রিয় হয়েছে নির্বাচন কমিশনও। জানা গিয়েছে, কমিশনের পক্ষ থেকে দুই শিবিরকে বলা হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে। প্রসঙ্গত, ৪০৪ আসনের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় সমাজবাদী পার্টির দখলে রয়েছে ২২৯টি আসন।


সেই শক্তির পরিচয় দিতেই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছেন মুলায়ম-অখিলেশরা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ১০০ জনের মত বিধায়কের সম্মতি আদায় করতে সমর্থ হয়েছেন অখিলেশ। আরও আসতে পারে বলে খবর। পাল্টা, মুলায়ম শিবিরও দাবি করেছে, তাদের কাছে ৫০ শতাংশের বেশি সংর্থন রয়েছে।


সাংসদ নরেশ অগ্রবাল দাবি করেন, দলের অধিকাংশ বিধায়ক, বিধান পরিশদ সদস্য এবং সাংসদ অখিলেশের সঙ্গে রয়েছে। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, গত ১ জানুয়ারি অখিলেশের ডাকা সম্মেলনে প্রায় ২০০ জনের মত নেতা-মন্ত্রীরা যোগ দিয়েছিলেন।


এদিন সন্ধ্যেবেলা লখনউতে ফিরে বৈঠকে বসে মুলায়ম শিবির। শোনা যাচ্ছে, বাপ-বেটা’র এই দ্বৈরথে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন দলের প্রবীণ নেতা আজম খান। তিনি এদিন অখিলেশের সঙ্গে বৈঠক করেন, সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন।