কলকাতা: তাঁর বন্ধুর মায়ের জন্য কোভিড-১৯-এর ওষুধ খুঁজেও সময়মতো তা যোগাড় করতে পারেননি দীপক শাহ। সেই থেকে সঠিক সময়ে এই ড্রাগ জোগাড় করে হাতে তুলে দেওয়া কতখানি প্রয়োজন, তা অনুভব করতে শুরু করেন মুম্বইয়ের এই বস্ত্র ব্যবসায়ী।কারণ, যিনি আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁর কাছে প্রতিটি মিনিটই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুম্বইয়ের ঠানে এলাকার বাসিন্দাদের কোভিড-১৯-এর ওষুধ কোথায় কতটা মজুত, কিভাবে মিলতে পারে সে সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ দেন তিনি। জোগাড়ও করে দেন। তিনি এখন এমনকী ২ হাজার কিলোমিটার দূরে কলকাতায়ও বহু মানুষের কাছেও খোঁজ পৌঁছে দিচ্ছেন ওষুধের।প্রতিদিনই তাঁর কাছে অসংখ্য ফোন আসে কলকাতার রোগীদের কাছ থেকে।


সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, আমি কিছুদিন আগে আমার বন্ধুর মায়ের জন্য কোভিড চিকিত্সার ওষুধ কিনছিলাম। তখন কোনও কেমিস্ট কিংবা ড্রাগিস্টকে আমি চিনতাম না। ডাক্তাররা রেমডিসিভির আনতে বলেন। কিন্তু কাছাকাছি কোনও ফার্মেসিতে আমি ওষুধটা পাইনি।এদিকে বুঝতে পারছিলাম যে দেরি হয়ে যাচ্ছে। কোভিড রোগীর জন্য সময়টা অত্যন্ত জরুরি।

এটা অনুভব করেই শাহ যে হাসপাতালে বন্ধুর মা ভর্তি ছিলেন সেখানকার কয়েকজন স্টকিস্ট এবং ডিস্ট্রিবিউটরের সঙ্গে আলাপ জমান। সাহায্য করতে উৎসাহী এমন কয়েকজন ডাক্তারের সঙ্গেও কথা বলেন। সেই থেকেই ধীরে ধীরে করোনা চিকিত্সার ওষুধের জোগান সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি হয় তাঁর। ঠিক করেন যাঁরা ওষুধের খোঁজ না পেয়ে নাকাল হচ্ছেন তাঁদের সাহায্য করবেন।

হোয়াটসঅ্যাপে তিনি ধীরে ধীরে ছড়িয়েও দেন নিজের প্রয়াস ও ইচ্ছার কথা। কিছুদিনের মধ্যেই ঠানে এলাকা থেকে বেশ কিছু মেসেজ তাঁর কাছে আসতে শুরু করে। তাঁরা শাহের কাছে স্টকিস্ট, ডিস্ট্রিবিউটরদের নম্বর জানিয়ে সাহায্য করতে বলেন। ক্রমে এমন সাহায্য চেয়ে ফোন আসতে থাকে গোটা মহারাষ্ট্র, এমনকী গুজরাত থেকেও। শাহ বলেন, আমি যখন পশ্চিমবঙ্গ থেকেও ফোন পেলাম, বেশ অবাক হলাম। কিন্তু আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করলাম কেমন করে মানুষ ওষুধ পেতে পারেন সে ব্যাপারে সাহায্য করতে।এখন শাহ পশ্চিমবঙ্গ থেকে দিনে প্রায় ৮০টি মতো ফোন পান।

শাহ জানাচ্ছেন রেমডিসিভির, টোসিলিজামাব-এর মতো ওষুধগুলো কতটা স্টক আছে তা এখন তিনি নিয়মিত রাখেন স্টকিস্টদের থেকে। মুম্বইয়ের বহু ডাক্তার, স্টকিস্ট, ডিস্ট্রিবিউটর, প্রস্তুতকারক এখন তাঁকে এক ডাকেই চেনেন। আর ওষুধ আছে জানলেই খবর দিয়ে দেন যারা ওষুধের খোঁজ করেছেন তাঁদের। পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা করেন। এখন থানের জৈন সম্প্রদায় পরিচালিত ভানুশালী সমাজ হাত মিলিয়েছে শাহের এই প্রয়াসের সঙ্গে।