নয়াদিল্লি: ২৪ দিনের ওপরে মায়ের মরদেহ মর্গেই পড়ে। চিন থেকে মৃতদেহ দেশে ফেরাতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিদেশ মন্ত্রকে চিঠি লিখে সাহায্যের আর্জি ছেলের।


গত ২৪ জানুয়ারি চিনের জেংঝাউয়ের এক হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে রীতা রাজিন্দর মেহরার। প্রথমে মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা ডেথ সার্টিফিকেটে লেখেন, ‘উদ্ধারের আগেই মৃত্যু’। তারপর বয়ান বদলে লেখা হয়, ‘হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু’। এরপর আরও একটি সার্টিফিকেট ইস্যু করে তাতে লেখা হয়, ‘হঠাৎ মৃত্যু’।  একাধিকবার ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ধোঁয়াশায় তাঁর ছেলে।


দাঁতের চিকিৎসক বছর পয়ত্রিশের পুনীত মেহরার বয়ান অনুযায়ী, ২৪ জানুযারি মেলবোর্ন থেকে মুম্বই (ভায়া বেজিং) ফিরছিলেন তাঁরা। ৯ ঘণ্টার উড়ানের পর পুনীতের মা শৌচালয়ে যান।  দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ার পরও মা না ফেরায় বিমান সেবিকাদের জানান পুনীত। পরে শৌচালয় থেকেই রীতা রাজন্দির মেহরাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।


যাত্রীদের মধ্যে থেকেই একজন ডাক্তার ও নার্স  চেষ্টা করেও তাঁর জ্ঞান ফেরাতে পারেননি। এরপর চিনের জেংঝাউয়ে তড়িঘড়ি বিমান অবতরণ করে  তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তাররা তা রীতা দেবীকে মৃত বলে ঘোষণা পরে। তারপর থেকে হাসপাতালের মর্গেই রয়েছে দেহ। পুনীত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে এলেও এখনও মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে পারেননি। করোনাভাইরাস যেভাবে মহামারি আকার নিয়েছে তাতে চিন শেষকৃত্যের জন্য বেজিং, সাংহাই ও জেংঝাউয়ের বাইরে মরদেহ ছাড়তে নারাজ। এই অবস্থায় মায়ের মরদেহ দেশে নিয়ে আসতে পুনীত চিনে ভারতীয় অ্যাম্বাসিতে যোগাযোগ করেছেন। তবে কাজ হয়নি। করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে চিনের জবজীবনও বিপর্যস্ত। রোগ যেন অন্যত্র না ছড়ায় সেকারণেই জনজীবনেও অনেক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।


আর কোনও উপায় না পেয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি লেখেন পুনীত। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও চিঠি লিখে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।