মুম্বই:  বৃহস্পতিবার আচমকা মহারাষ্ট্রের রায়গড়ের উরন বন্দর এলাকায় জঙ্গি-আতঙ্ক ঘিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। দুই স্কুল ছাত্র দাবি করে, তারা চারজন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে সেনাবাহিনীর পোশাকে এলাকায় ঘুরে বেড়াতে দেখেছে। এরপরই গোটা এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। দুই সন্দেহভাজনের স্কেচও প্রকাশ করেছে মুম্বই পুলিশ। পশ্চিম বায়ুসেনা কম্যান্ডোবাহিনী মুম্বই বন্দর জুড়ে হাই-অ্যালার্ট জারি করেছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, চার সন্দেহভাজনকে খুঁজে বের করার জন্যে সবধরনের চেষ্টা শুরু হয়ে গিয়েছে।

চার সন্দেহভাজনের মধ্যে দুই সন্দেহভাজনের স্কেচ তৈরি করেছে মুম্বই পুলিশ। পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সমস্ত জায়গায়। ভারতীয় বায়ুসেনার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁরা মুম্বই পুলিশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চার সন্দেহভাজন জঙ্গির খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করে দিয়েছে। মহারাষ্ট্রের মুম্বই, থানে, নভি মুম্বই এবং রায়গড় এলাকায় হাই-অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করতে মহারাষ্ট্র পুলিশ কোস্ট গার্ডেরও সাহায্য নিচ্ছে।



শুধুমাত্র মুম্বই বন্দর নয়, গুজরাত বন্দরেও হাই-অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সবসময় সতর্ক থাকতে। অ্যাডিশনাল কমিশনার অফ পুলিশ তিরাথ রাজ জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বন্দর এলাকায় সমস্ত মানুষের গতিবিধি ওপর কড়া নজর রাখতে। কোথাও কোনও সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে।



শুক্রবার উরন ও আশপাশের এলাকার সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে অপর এক সূত্রের দাবি, পাঠান স্যুট পরা পাঁচ-ছজন সন্দেহভাজনকে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে উরন শহরে। তাদের সঙ্গে অস্ত্র ও ব্যাকপ্যাক ছিল। যদিও আগে নৌসেনার মুখপাত্র রাহুল সিংহ দাবি করেছিলেন, সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিদের সেনা জওয়ানের পোশাকে দেখা গিয়েছিল।

উরন ও কারানজা এলাকায় নৌসেনা, কোস্টগার্ড, সিআইএসএফ, কুইক রেসপন্স টিম এবং মহারাষ্ট্র পুলিশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চিরুণি তল্লাশি চালালেও, এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এই তল্লাশি অভিযানে এনএসজি-র এলিট ফোর্স ও মহারাষ্ট্র পুলিশের একটি বিশেষ প্রশিক্ষিত দলকেও কাজে লাগানো হয়েছে।

নভি মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার, অন্য পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সারা রাত ধরে পুরো পরিস্থিতির ওপর নজরদারি রেখে চলেছেন।

প্রসঙ্গত, উরি হামলার চারদিন পরই মুম্বই পুলিশের কাছে একটি সতর্কবার্তা আসে। এরপর গতকাল শহরে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় সন্দেহভাজন জঙ্গিদের। তারপর থেকেই এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে এনএসজি বাহিনী। তিনটি জায়গায় টহল দিতে দেখা যায় সন্ত্রাসবিরোধী কম্যান্ডো ফোর্সকে। দিল্লিতেও প্রস্তুত রয়েছে অপর একটি বাহিনী। যে কোনওরকম পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নৌসেনার কম্যান্ডো বাহিনী মার্কোস এবং সন্ত্রাস দমনে দেশের এলিট ফোর্স এনএসজি-কে তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ময়দানে নেমেছে মহারাষ্ট্র পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা! নভি মুম্বইয়ের বিভিন্ন রাস্তায় নাকাবন্দি করে চলচে তল্লাশি। সমুদ্রপথে তল্লাশি শুরু করেছে নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ আইএনস অভিমণ্যু!