নয়াদিল্লি: মুম্বইতে প্রবল জনরোষের মুখে বিতর্কিত ইসলামি প্রচারক তথা টেলিভিশন বক্তা জাকির নায়েক। ইতিমধ্যেই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের মত, এই বিক্ষোভ আরও ব্যাপক আকার নিতে পারে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে গুলশনের কাফেতে সন্ত্রাসবাদী হামলায় সামিল পাঁচ সন্দেহভাজন জঙ্গি এই ভারতীয় মৌলবির প্রচারে উদ্ধুদ্ধ হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।


জোরদার করা হয়েছে জাকিরের নিরাপত্তা। ঢাকায় হামলার প্রতিবাদে মুসলিম সংগঠন রাজা অ্যাকাডেমির সদস্যরা আজ সকালের নমাজের পর নায়েকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। মহম্মদ রফিক কাদরি রিজাবি জানিয়েছেন, আজ পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। আমরা দেখছি বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ সন্ত্রাসের শিকার। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমদের প্রতিবাদ। ইসলাম শান্তির ধর্ম। যারা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত তারা কখনওই মুসলমান নয়। জাকির নায়েককেও নিষিদ্ধ করা উচিত। তার বক্তব্যও অত্যন্ত বিতর্কিত।


ইতিমধ্যেই ওই সংগঠন ইসলামিক রিসার্চ ফাইন্ডেশন-কে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে শিবসেনা।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানিয়েছেন, জাকির নায়েকের বক্তৃতা আমাদের কাছে চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে। এজেন্সি এর ওপর নজর রাখছে। তিনি বলেন, একজন মন্ত্রী হয়ে আমি বলতে পারি না এব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রিজিজু আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের। দুদেশের মধ্য পারস্পরিক সমঝোতাও খুব দৃঢ়। বিশেষত সন্ত্রাসদমনের মতো বিষয়ের ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক বেশ শক্তিশালী। তিনি আরও বলেন, দুদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং যৌথ লড়াইয়ের মাধ্যমেই সন্ত্রাস মোকাবিলা সম্ভব।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তদন্তকারীরা জেনেছেন, ওই নাশকতায় যোগদানকারীদের অন্যতম, সে দেশের শাসক দল আওয়ামি লিগের এক নেতার ছেলে, রোহন ইমতিয়াজ গত বছর ফেসবুকে জাকিরের ভাষণ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে ফেসবুকে প্রচার চালিয়েছিল। ঘটনাচক্রে জাকির বাংলাদেশে পিস টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খুবই জনপ্রিয়। ভাষণে বিতর্কিত এই মৌলবি সব মুসলিমকে সন্ত্রাসবাদী হতে ডাক দিয়েছে বলে অভিযোগ।


শিবসেনা সাংসদ অরবিন্দ সবন্ত জানিয়েছেন, নায়েক এবং তার প্রতিষ্ঠান নিষিদ্ধ করার দাবিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, যাদের বক্তব্য দেশের একতা ভেঙে দেয়, হিংসা আনে, তাদের নিষিদ্ধ করাই উচিত। ইসলাম ভালোবাসা-শান্তি শেখায়। কিন্তু এখন সেটা প্রতিদিনের হাই অ্যালার্টে পরিণত হয়েছে। এব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
যদিও ইসলামিক রিসার্চ ফাইন্ডেশনের ম্যানেজার মনসুর শেখ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।