নয়াদিল্লি: বিহারের মুজফফরপুরের সরকারি হোমের আবাসিক মেয়েদের ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহের অভিযোগের তদন্তে বেরনো যে বিস্তারিত তথ্য তাদের সামনে পেশ হয়েছে, তা ভয়াবহ, ভয়ঙ্কর। বলল সুপ্রিম কোর্ট।
সিবিআইয়ের দাখিল করা স্ট্যাটাস রিপোর্ট খতিয়ে দেখে বিচারপতি মদন বি লোকুরের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ বলেছে, এসব কী হচ্ছে? ভয়ঙ্কর ব্যাপার।
সিবিআই রিপোর্টে আবাসিক হোমের মালিক তথা মামলার মূল অভিযুক্ত ব্রজেশ ঠাকুরের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে শীর্ষ আদালত নোটিস দিয়ে জানতে চেয়েছে, কেন তাঁকে রাজ্যের বাইরের জেলে সরানো হবে না। সিবিআইয়ের রিপোর্টে ঠাকুরকে প্রভাবশালী বলে উল্লেখ করে জানানো হয়, জেলের ভিতরে তাঁর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া গিয়েছে। বর্তমানে জেলে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে আছেন ঠাকুর। বেঞ্চও তাঁর প্রভাবশালী পরিচিতির বিষয়টি মাথায় রেখেছে। বলেছে, মূল অভিযুক্তকে বিহারের জেলে রাখা ঠিক হবে না।
বিহার সরকার, সিবিআইয়ের কাছেও শীর্ষ আদালত জানতে চেয়েছে, কেন বিহারের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জু বর্মার স্বামী চন্দ্রশেখর বর্মাকে খুঁজে বের করতে দেরি হচ্ছে। মুজফফপুরের আবাসিক হোমে যৌন কেলেঙ্কারির চাঞ্চল্যকর অভিযোগ বেরিয়ে পড়ায় বিহারের সামাজিক কল্যাণ মন্ত্রী পদে ইস্তফা দিতে হয় মঞ্জু বর্মাকে। তাঁদের দুজনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের ব্যাপারেও বিহার পুলিশকে তদন্ত করতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
আজ বেঞ্চ বলেছে, যে সিবিআই টিম এই মামলার তদন্ত করছে, তাদের বদলানো যাবে না।
৩০ অক্টোবর পরবর্তী শুনানি ধার্য করেছে বেঞ্চ।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর শীর্ষ আদালত পটনা হাইকোর্টের এক রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় যাতে এই মামলা খতিয়ে দেখতে একেবারে নতুন সিবিআই টিম গড়তে বলা হয়। শীর্ষ আদালত বলে, এতে তদন্তই শুরু মার খাবে না, নির্যাতিতাদেরও ক্ষতি হবে। চলতি টিমে বদলের কোনও কারণই নেই।
ওই আবাসিক হোমে ৩০-টির বেশি মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রথম প্রকাশ্যে আসে রাজ্যের সমাজ কল্যাণ দপ্তরে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোস্যাল সায়েন্সের দেওয়া অডিট রিপোর্টে। ৪২-এর মধ্যে ৩৪টি মেয়ের ওপর যৌন অত্যাচারের অভিযোগ মেডিকেল পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে। ঠাকুর সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ৩১ মে এফআইআর দায়ের হয়।
বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়। হোম চালানো এনজিও-কে কালো তালিকায় ফেলে সেখানকার মেয়েদের সরানো হয় পটনা, মধুবনির বিভিন্ন আশ্রমে।