নয়াদিল্লি: জম্মু ও কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরাপত্তার পিছনে অর্থব্যয় বন্ধ করতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে পেশ করা পিটিশন গ্রহণ করতে সম্মত হল না সুপ্রিম কোর্ট।


এ ব্যাপারে একটি পিটিশন পেশ করেছিলেন আইনজীবী এম এল শর্মা। তাঁর বক্তব্য, কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের নিরাপত্তার পিছনে সরকার টাকা ঢালছে। এটা বন্ধ করতে হবে।এ ব্যাপারে সরকারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিক আদালত।কিন্তু সেই আর্জি বিচার করে দেখতে রাজি হয়নি বিচারপতি দীপক মিশ্র ও বিচারপতি ইউ ইউ ললিতকে নিয়ে গঠিত সর্বোচ্চ আদালতের বেঞ্চ। বিচারপতিরা জানিয়ে দেন, জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের সামনে কী কী, কতখানি বিপদ রয়েছে, সেসব খতিয়ে দেখা সুপ্রিম কোর্টের কাজ নয়। কেন্দ্র, সেনাবাহিনী আছে সেজন্য। এটা তাদেরই কাজ।

বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে কী করা দরকার, সেটা সরকার, সেনাবাহিনীর হাতে ছেড়ে দেওয়াই সবচেয়ে ভাল। এটা বলে দেওয়া ভাল, এ ধরনের বিষয়ে আদালতের ভূমিকা খুবই সামান্য। এগুলি জাতীয় নিরাপত্তার দিক থেকে সংবেদনশীল বিষয়, কেননা তার সঙ্গে দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িয়ে আছে।

শুনানি চলাকালে আবেদনকারী আইনজীবী বলেন, জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে বড় বিপদ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। তিনি কয়েকজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার নামও তোলেন।কিন্তু বিচারপতি মিশ্র তাঁকে থামিয়ে বলেন, আমি বা আমার সহকারী কেউই কোনও নাম নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নই। বিচারপতি তাঁকে প্রশ্ন করেন, বলুন তো আমাদের, দেশ রক্ষা করা কার কাজ? আবেদনকারী বলেন, দেশ বাঁচাতে পারে একমাত্র বিচারবিভাগই। সেজন্যই এসেছি সুপ্রিম কোর্টে। বিচারপতি সঙ্গে সঙ্গে বলেন, না, সংবিধানে স্বীকৃত মূল্যবোধগুলি রক্ষা করতেই রয়েছে আদালত। আপনি বলছেন, দেশের সামনে বিপদ রয়েছে। সেজন্য পরিস্থিতি সামলাতে কেন্দ্র, সেনাবাহিনী আছে।

আইনজীবী জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে উল্লেখ করায়ও আপত্তি তোলে বেঞ্চ। বিচারপতি মিশ্র বলেন, সন্ত্রাসবাদী কাজে কেউ গ্রেফতার না দোষী ঘোষিত না হলে আপনি কাউকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দিতে পারেন না। এই আদালত এটা মেনে নেবে না।

বেঞ্চ সব আদালতকে এহেন কড়া বার্তাও দেয় যে, এ ধরনের জনস্বার্থমূলক পিটিশনকে যেন আদালত গ্রহণ না করে বা উত্সাহ না দেয়। লিখিত নির্দেশে আবেদনকারী আইনজীবীর পিটিশনটি খারিজ করে বেঞ্চ বলেছে, নিরাপত্তা বা অন্য কোনও কারণে জম্মু ও কাশ্মীরকে অর্থ বরাদ্দ করার বিষয়টি একেবারেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনার মধ্যে পড়ে। এটাই আমাদের সুচিন্তিত মত।