নয়াদিল্লি: মোবাইল ফোন নম্বরের সঙ্গে আধার সংযুক্তির কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি বলে সাফ জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এ ব্যাপারে সরকার ২০১৭-র ৬ ফেব্রুয়ারির পর্যবেক্ষণের অপব্যাখ্যা করেছে এবং সংযুক্তির ব্যাপারে জোর দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি নিয়ে এভাবেই ব্যাখ্যা দিয়েছে।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি একে সিক্রি, বিচারপতি এএম খানউইলকর ও বিচারপতি অশোকভূষণ ও বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে গঠিত বেঞ্চে মামলার শুনানি ছিল। শুনানির সময় বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, লোকনীতি ফাউন্ডেশন মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সিম কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তির নির্দেশ দেয়নি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের সার্কুলারে এমন কথাই বলা হয়েছে। আদালত এই নির্দেশ দেয়নি।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ উল্লেখ করে যে, ২০১৭-র ৬ ফেব্রুয়ারির নির্দেশে শুধুমাত্র অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগির বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছিল। রোহতগি বলেছিলেন যে, গ্রাহকদের পরিচয় যাচাইয়ের ক্ষেত্রে আধার অন্যতম একটি নথি ।
তাতপর্য্যপূর্ণভাবে ইউআইডিএআই-এর আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বেঞ্চের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বলেন, সরকার সম্ভবত মোবাইল ফোন গ্রাহকদের পরিচয় যাচাই সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে গ্রহণ করেছিল।
অ্যাটর্নি জেনারেল তাঁর বক্তব্যে কোর্টকে জানিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে কার্যকরী পরিকল্পনা খুব শীঘ্রই তৈরি করা হবে এবং পরিচয় যাচাইয়ের কাজ এক বছরের মধ্যে শেষ করা হবে। সুপ্রিম কোর্ট অ্যাটর্নি জেনারেলের ওই বক্তব্য সম্পর্কে ইউআইডিএআই-এর আইনজীবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এর আগে দ্বিবেদী দাবি করেন, আধার ও মোবাইল সংযুক্তি এমন কোনও বড় ব্যাপার নয়।এতে নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকারেও হস্তক্ষেপ হচ্ছে না। কারণ, আধারের মাধ্যমে কল রেকর্ড সংগ্রহ হয় না। তাঁর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্ট তাদের নির্দেশের ব্যাখা দেয়।
উল্লেখ্য, ইউআইডিএআই জানায় যে, সমস্ত মোবাইল সংযোগের ক্ষেত্রেই আধারের সংযুক্তির নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি সরকারের তাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাহকদের একের পর এক মেসেজ পাঠাতে শুরু করে। ওই নির্দেশ মানা না হলে চরম ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয় ওই মেসেজগুলিতে।
গত ১৩ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আধারের সঙ্গে মোবাইল নম্বর ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংযুক্তির সময়সীমা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়িয়ে দিয়েছে। আধারের বৈধতা সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পর্যন্ত সরকারকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।