নয়াদিল্লি: দেশের কয়েকটি রাজ্যে করোনা সংক্রমণের প্রকোপ নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন আনলক গাইডলাইন জারি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ১ থেক ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর হতে চলা ওই নতুন নির্দেশিকায় নজরদারি, কনটেনমেন্ট ও সতর্কতার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
গাইডলাইনে বলা হয়েছে, সব রাজ্য ও কেন্দ্র-শাসিত অঞ্চলকে কঠোরভাবে কন্টেনমেন্ট সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে হবে। বিভিন্ন কাজের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট নিয়ম মানতে হবে এবং কোভিড-১৯ মোকাবিলায় যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন ও ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পরার বিরুদ্ধে এতদিনে যতটা সাফল্য মিলেছে, তা আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাইডলাইনে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
কন্টেনমেন্ট জোনে কেবলমাত্র অত্যাবশ্যক কাজে অনুমতি
কন্টেনমেন্ট জোনে কেবলমাত্র অত্যাবশ্যক কাজে অনুমতি দেওয়া হয়েছে নতুন নির্দেশিকায়। বলা হয়েছে, কন্টেনমেন্ট জোনে যাতে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা অবলম্বন করা হয়, তা নিশ্চিত করবে স্থানীয় পুলিশ ও জেলা-পুর প্রশাসন। রাজ্য প্রশাসনের দায়িত্ব হবে ওই আধিকারিকদের দায়িত্বের ওপর নজর রাখার। নতুন গাইডলাইন ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর হবে।
নজরদারি ও কন্টেনমেন্ট
একেবারে তৃণমূল স্তরে কন্টেনমেন্ট জোনগুলির চিহ্নিতকরণ ও সেখানে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও কেন্দ্র-শাসিত অঞ্চলকে। এক্ষেত্রে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের জারি করা নিয়মাবলি অনুসরণ করতে হবে। প্রত্যেক রাজ্যের সংশ্লিষ্ট জেলা কালেক্টর কন্টেনমেন্ট জোনের তালিকা প্রকাশ করবে। তা স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছে পাঠাতে হবে।
কন্টেনমেন্ট জোনে কেবলমাত্র প্রয়োজনীয় কাজেই অনুমতি দেওয়া হবে।
এই জোনের মধ্যে থেকে বাইরে মানুষের যাতায়াতের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। শুধুমাত্র, মেডিক্যাল বা জরুরি ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তিকে এই জোনের বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
জোনের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অত্যাবশ্যকীয় জিনিসের সরবরাহ ও পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে হবে।
জোনের মধ্যে প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে নজরদারি করবে বিশেষ দল। এর জন্য বিশেষ নজরদারি টিম গঠন করতে হবে। নিয়ম মেনে, টেস্ট করাতে হবে।
কোনও ব্যক্তি পজিটিভ হলে, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সংস্পর্শে আসা মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাঁদের খোঁজ করতে হবে। তাঁদের চিহ্নিত করে পরের ১৪-দিন আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইনের সুপারিশ করা কার্যকর করতে হবে।
কোভিড-১৯ রোগীদের দ্রুত আইসোলেশন করে তাঁদের বাড়ি বা হাসপাতালে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে। সেখানে সমস্ত রকম নিয়মাবলি ও নির্দেশিকা মানতে হবে।
কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরে কয়েকটি বাদে সব ধরনের কাজে অনুমতি
কোনও রাজ্য যদি স্থানীয় স্তরে কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরে লকডাউন লাগু করতে চায়, তাহলে সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের আগাম অনুমতি নিতে হবে।
কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরে কয়েকটি বাদে সব ধরনের কাজে অনুমতি দেওয়া হবে। সেই কয়েকটি কাজেও অনুমতি দেওয়া হবে, তবে সেক্ষেত্রে কিছু নির্দেশিকা ও নিযেধাজ্ঞা মানতে হবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বিমান যাত্রায় অনুমতি দেওয়া হবে।
সিনেমা হল ও থিয়েটারে ৫০ শতাংশ দর্শকাসনে অনুমতি।
সুইমিং পুলে কেবলমাত্র ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ।
প্রদর্শনী হল কেবলমাত্র ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অনুমতি।
সামাজিক/ধর্মীয়/ক্রীড়া/মনোরঞ্জন/শিক্ষা/সাংস্কৃতিক জমায়েতে সর্বাধিক হলের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মানুষকে অনুমতি দেওয়া হবে। সর্বাধিক ২০০ জনকে অনুমতি।
আন্তঃরাজ্য ও আন্তঃজেলা যাতায়াতে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই
মানুষ ও মালপত্রের আন্তঃরাজ্য ও আন্তঃজেলা যাতায়াতে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। এমনকী, স্থল-সীমান্ত দিয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে আমদানি-রফতানিতেও নিষেধাজ্ঞা নেই। এর জন্য আলাদা অনুমতি বা অনুমোদন অথবা ই-পারমিটের প্রয়োজন নেই।