নয়াদিল্লি: নির্ভয়া গণধর্ষণকাণ্ডে চার দোষীর ফাঁসির সাজা বহাল রাখার নির্দেশ দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এদিন বলেছে, এই অপরাধকে যদি বিরলের মধ্যে বিরলতম না বলা যায়, তাহলে কোনটাকে বলা যাবে। যেভাবে অপরাধ করা হয়েছে তা সামাজিক আস্থা,বিশ্বাস সম্পূর্ণ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। তাই এই অপরাধ বিরলের মধ্যে বিরলতম বলেই গণ্য করা উচিত এবং যার সাজা ফাঁসিই হওয়া উচিত।

বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই অভিমত জানিয়েছে।

নির্ভয়ার গণধর্ষণের ঘটনা ঘিরে সারা দেশজুড়েই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। প্যারামেডিকসের ছাত্রীকে তাঁর বন্ধুর সামনেই একটি বাসে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে ছয় দোষী।

সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ বলে, দোষীদের পরিচিতি, সামাজিক পরিচিতি, বয়স বা অপরাধের পূর্ব নজির না থাকা, জেলে ভালো আচরণ এসব কিছুই মেয়েটির ওপর চালানো অত্যাচারের থেকে বড় হতে পারে না। দোষীরা মেয়েটিকে ভোগের বস্তু হিসেবে দেখেছিল। তাঁর চরম সর্বনাশ করাই ছিল অপরাধীদের লক্ষ্য। দোষী ছয়জনের অপরাধমূলক যড়যন্ত্রের উদ্দেশ্যই প্রমাণিত হয়েছে। তারা মেয়েটি ও তার পুরুষ বন্ধুকে চলন্ত বাসে চাপা দিয়ে মেরে ফেলে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করে ফেলার চেষ্টা করেছিল।

সেই মেয়েটির যে পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে বাসে ছিলেন এবং ঘটনার একমাত্র সাক্ষী, তাঁর বক্তব্যকেই আমাদের গ্রহণযোগ্য বলেই মনে হয়েছে। অপরাধীদের ও মেয়েটির ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মতো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাতেও স্পষ্ট প্রমাণ, ঘটনার দিন তারা সেখানেই ছিল। তাছাড়া, নির্যাতিতার মৃত্যুকালীন জবানবন্দী সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ এবং তার সত্যতা নিয়ে কোনও সংশয়ই নেই।

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এই অপরাধ সুনামির মতো ভয়াবহ আঘাত। এটা বর্বরোচিত অপরাধ, যা সমাজের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।