নয়াদিল্লি: অনেক ক্ষেত্রেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পণবিরোধী আইনের অপব্যবহার করছেন বধূরা। পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। অভিযোগের সত্যতা যাচিয়ে দেখা না পর্যন্ত এ ধরনের মামলায় কারওকে গ্রেফতার করতে নিষেধ করেছে তারা।


বিচারপতি এ কে গোয়েল ও বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের বেঞ্চ মনে করছে, সাংসারিক অশান্তির ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই হেস্তনেস্ত করতে ৪৯৮এ ধারায় মহিলারা অভিযোগ দায়ের করছেন। স্বামীর ভাইবোন, বাবা মা, তাঁদের বাবা মা, অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ে- সকলকে অভিযুক্ত করছেন ভুয়ো অভিযোগে। কিন্তু বহু সময় দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্তরা নিরপরাধ। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করা এ ধরনের মামলায় ইতি টানার সময় এসেছে।

বিচারবিভাগ এতদিন মনে করত, গৃহবধূরাই সব ক্ষেত্রে অত্যাচারের শিকার, মুখ বুজে শ্বশুরবাড়ির গালমন্দ, অত্যাচার, কোনও কোনও ক্ষেত্রে মারধর সহ্য করেন তাঁরা। অত্যাচার সহ্য করা অসম্ভব হয়ে উঠলে একমাত্র তখনই তাঁরা বিচার প্রার্থনা করেন। কিন্তু এই রায় সেই অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি সরে আসা বলে মনে করা হচ্ছে।

শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, অভিযোগকারিণীর মুখের কথায় আর অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা যাবে না, তাঁরা অপরাধী কিনা আগে খতিয়ে দেখতে হবে। এ জন্য প্রতিটি রাজ্যের প্রত্যেক জেলায় গঠন করতে হবে ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার কমিটি। তাদের কাজ হবে, অভিযোগকারিণীরপ বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করে দেখা।

এ ধরনের যত অভিযোগ পুলিশের কাছে আসবে, সেগুলি সব আগে যাবে ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার কমিটিতে। যতক্ষণ না সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে কমিটি তার রিপোর্ট দিচ্ছে ও সেই রিপোর্টে অভিযোগের সত্যতা না প্রমাণিত হচ্ছে, ততক্ষণ স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির কারওকে গ্রেফতার করা যাবে না।

অভিযোগ দায়েরের এক মাসের মধ্যে কমিটিকে সেই অভিযোগ সংক্রান্ত রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট পুলিশ স্টেশনে জমা দিতে হবে। আর সম্ভব হলে সেদিনই অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন নিয়ে রায় দেবে ট্রায়াল কোর্ট। এ ধরনের মামলায় স্বামীর বাড়ির লোকদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার জন্য জোরজার করা যাবে না।