নয়াদিল্লি:  নোট বাতিলের পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার যে সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল তা দুই ধাপে তুলে নেওয়ার কথা জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে সপ্তাহে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত তোলা যাবে সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে। এর আগে এই সীমা ছিল সপ্তাহে ২৪ হাজার টাকা।একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, আগামী ১৩ মার্চ থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে কোনও ঊর্ধ্বসীমা থাকবে না।
এদিন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর জানিয়েছেন, টাকার যোগানের সঙ্গে তাল রেখে দুটি ধাপে সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রীয় অর্থ বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছিলেন, নোট বাতিলের পর নতুন নোট যোগানের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে। তাঁর কথাতেই টাকা তোলার ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা  খুব শীঘ্রই শিথিলের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল।
কিছুদিন আগেই কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার সীমা প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ৮ নভেম্বর ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরিস্থিতি বলেছিলেন ৫০দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘোষণা অনুযায়ী, ৪ মাস পর স্বাভাবিক হবে পরিস্থিতি। কিন্তু, খাতায় কলমে স্বাভাবিক হবে, না কি বাস্তবেও হবে? বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, শুধু ঘোষণা করলেই তো হল না! গ্রাহকদের প্রয়োজনমতো টাকা দিতে চাই পর্যাপ্ত টাকার জোগান। ছোট নোট চাই! যেটা এখনও স্বাভাবিক হয়নি, সেটা এক মাসের মধ্যে স্বাভাবিক হবে।


অনেকে আবার প্রশ্ন তুলছেন, টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করতে চার মাসই বা লেগে গেল কেন? এই চার মাসে ছোট ব্যবসায়ীদের যে চূড়ান্ত ক্ষতির মুখোমুখি হতে হল, তা কি সরকার পূরণ করবে?
সেক্সপিয়র সরণির বস্ত্র বিপণির কর্ণধার ময়াঙ্ক অগ্রবাল জানালেন, গত তিন মাসে নগদে লেনদেন ধাক্কা খাওয়ায় ব্যবসা প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে।
জেলায় তো পরিস্থিতি আরও খারাপ। দুর্গাপুরের রেস্তোরাঁ ও ম্যারেজ হলের মালিকরা বলছেন, অন্যান্যবার শীতকালে ফাঁকা বসে থাকার জো থাকে না। অথচ এবার নোট বাতিলের পর প্রায় মাছি তাড়ানোর মতো অবস্থা।
বীরভূমের অন্যতম পর্যটনস্থল তারাপীঠের হোটেল মালিকদের দাবি, ব্যবসার এরকম হাল কখনও হয়নি।
ডুয়ার্সের চা বাগানগুলিতে তো অবস্থা আরও খারাপ। নোট সঙ্কটে বহু শ্রমিক বেতন পর্যন্ত পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।