বেঙ্গালুরু:  মহিলাদের রাতের শিফটে কাজ করানো উচিৎ নয় এবং বিভিন্ন সংস্থাও যেন যত কমসংখ্যক মহিলাকে রাতের শিফটে ডাকে, প্রস্তাব রেখেছেন কর্ণাটক বিধানসভার একদল বিধায়ক নিয়ে গঠিত এক কমিটি। তবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত মহিলা ও সমাজকর্মীরা। ওই মহিলাকর্মীদের দাবি, এই প্রস্তাব যদি গৃহীত হয়, তাহলে কর্মস্থলে মহিলাদের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে। প্রভাব পড়তে পারে তাঁদের নিয়োগেও।

এরসঙ্গে সঙ্গে সমালোচকরা নজরে এনেছেন সম্প্রতি সরকারের মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গটাও। সম্প্রতি মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২ সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ২৬ সপ্তাহ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মত, এরফলেও মহিলাদের নিয়োগে প্রভাব পড়তে পারে।

কর্ণাটক বিধানসভার ওই কমিটির চেয়ারম্যান এনএ হরিসের দাবি, বাড়িতে, সংসারে অনেক বেশি দায়িত্ব থাকে মহিলাদের। তাঁদের বাচ্চাদের দায়িত্বও পালন করতে হয়। প্রসঙ্গত, মহিলারা চাকরি করলেও, তাঁদের অনেক বেশি সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে হয়। সেইজন্যেই তাঁদের রাতে বাড়িতে থাকা প্রয়োজন। তিনি তাঁর বক্তব্যে একথাও বলেন, মহিলারা যদি বেশি রাত অবধি বাড়ির বাইরে থাকেন, তাহলে বাচ্চারা অবহেলিত হতে পারে। তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। তিনি মনে করেন, কথায় অনেক কিছু বলা যায়, কিন্তু বাস্তবে সমস্ত দায়িত্ব পালন বাড়ির মহিলাদেরই করতে হয়।

এছাড়া রাতের শিফট করে বাড়ি ফেরা মহিলাদের পক্ষে নিরাপদ নয় বলেও তিনি দাবি করেন। একথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এরসঙ্গে পুরনোপন্থী ভাবনাচিন্তা বা প্রগতিশীল ভাবনাচিন্তার কোনও সম্পর্ক নেই।

তবে কমিটির চেয়ারম্যানের এই বক্ত্যবে নিয়োগ সংস্থা এলন সেখানকার মহিলাকর্মীরা কেইউ খুশি নন। এপ্রসঙ্গে একদল মহিলাকর্মীর বক্তব্য, এরপর তাঁরা বলবেন মহিলাদের বাড়িতে থেকে সংসার সামলে, বাচ্চাদের দেখাশোনাই করা উচিৎ। এটা আসলে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতারই প্রকাশ বলেও তাঁরা মন্তব্য করেন।

এইমুহূর্তে বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে ১৫ লক্ষের মধ্যে পাঁচ লক্ষ মহিলাকর্মী রয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশিকা জারির পর হয়তো নিয়োগকর্তারা দুবার ভাববেন মহিলাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে।