নয়াদিল্লি: দেওয়ালির সময় রাজধানী দিল্লি, ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন (এনসিআর) এলাকায় শব্দবাজি বিক্রির ওপর গত ৯ অক্টোবরের নিষেধাজ্ঞার রায় সংশোধনে রাজি হল না সুপ্রিম কোর্ট। বাজি বিক্রেতারা সর্বোচ্চ আদালতে ওই রায় কিছুটা শিথিল করার আবেদন করেছিলেন। ১৯ অক্টোবর দেওয়ালির প্রাক্কালে অন্তত একটা-দুটো দিন বাজি বিক্রির অনুমতি দেওয়ার আর্জি জানান তাঁরা।

তাঁদের বক্তব্য, লাইসেন্স পুনর্বহাল হওয়ার পর বাজি কিনতে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছেন, নিষেধাজ্ঞার নির্দেশে তাঁদের বিরাট লোকসান হবে।

কিন্তু বিচারপতি এ কে সিকরি ও বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ আর্জি নাকচ করে বলেছে, শব্দবাজি বিক্রির ব্যাপারে ঘোষিত নির্দেশ শিথিল করছি না আমরা। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শব্দবাজি বিক্রি করা যাবে না, জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতিরা।

বেঞ্চ বলেছে, দিল্লি-এনসিআরে দেওয়ালি পুরোপুরি বাজিমুক্ত হবে না, কেননা নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার আগে কেনা বাজি লোকে ফাটাবেই। সেটুকুই অনেক।

এদিন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির একটির তরফে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ৯ অক্টোবরের শব্দবাজি সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার রায় ঘোষণার পর কিছু রাজনৈতিক নেতার মন্তব্যের উল্লেখ করেন। বেঞ্চ বলে, এ নিয়ে রাজনীতি করবেন না। কিছু লোক বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক রং দিতে চেয়েছেন জেনে আমরা ব্যথিত। এটা দুঃখজনক।

ভূষণ এও বলেন, এমন কথাও বলা হচ্ছে যে, লোকে দিল্লি-এনসিআরের বাইরে থেকে শব্দবাজি কিনবে এবং এর ফলে শীর্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞা নির্দেশের আসল উদ্দেশ্যই মার খাবে। বেঞ্চের মন্তব্য, আসলে এ ধরনের কথাবার্তা আমাদের নির্দেশের প্রতি অসন্তোষের প্রতিফলন।

পরিবেশ দূষণের মাত্রার ওপর কতটা, কী প্রভাব পড়ে, এবারের দেওয়ালির সময় শব্দবাজি বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সেটাই বোঝার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানায় বেঞ্চ।

বাজি বিক্রেতাদের হয়ে আইনজীবী মুকুল রোহাতগি সওয়াল করেন, দেওয়ালি দীর্ঘদিন ধরেই এ দেশে পালিত হচ্ছে। দিল্লি ব্যতিক্রম নয়। তাছাড়া দূষণের সমস্যা তো সর্বত্র আছে। বহু লোক, শিশু দেওয়ালিতে আনন্দ করতে চায়। দেওয়ালির আগে অন্তুত একটা-দুটো দিন বাজি বিক্রির সম্মতি চান তিনি। বলেন, আদালত না হয় বাজি ফাটানোর সময় বেঁধে দিক।

রোহাতগি আরও বলেন, শীর্ষ আদালতের গত ১২ সেপ্টেম্বরের নির্দেশে সাময়িক স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে দিল্লি-এনসিআরে শব্দবাজি বিক্রিতে অনুমতি দেওয়ার ফলে বাজি বিক্রেতারা লাইসেন্স পান, বাজি কেনায় বিনিয়োগও করেন।

বাজি বিক্রেতাদের স্বপক্ষে অন্য আইনজীবীরা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার দাবিতে সওয়াল করেন, দেওয়ালি ধর্মীয় গণ্ডি ছাড়িয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে। তাছাড়া অনেক নিয়ন্ত্রণ মেনেই শব্দবাজির ব্যবসা চলে, প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হয়।

কিন্তু বেঞ্চ স্পষ্ট বলে, এটা রায়ের মূল মর্মবস্তুর পরিপন্থী হবে। দিল্লি পুলিশকে নিষেধাজ্ঞা নির্দেশ পালন করতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত।