বালেশ্বর:  বুধবারই ওড়িশার কালাহান্ডিতে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে এক স্বামী তাঁর মৃত স্ত্রীকে নিয়ে ১০ কিমি পথ হেঁটেছিলেন। তারপরের দিন আরও এক চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ্যে এল। এবারও ঘটনাস্থল ওড়িশা। ওড়িশার বালেশ্বরে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্যে গাড়ি পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের কর্মীরা দেহের নীচের অংশ থেকে কোমর এবং পায়ের হাড় ভেঙে টুকরোগুলো একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে নেয়। এরপর প্লাস্টিকের ব্যাগটি একটি বাঁশে বেঁধে নিয়ে প্রকাশ্য রাস্তায় দিয়ে হেঁটে চলে যায়। এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

দেহটি ছিল ৭৬ বছরের বিধবা বৃদ্ধা শালমণি বারিকের। বুধবার ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন তিনি। তারপর বিনা চিকিত্সায় বালেশ্বরের সোরো শহরের স্থানীয় চিকিত্সা কেন্দ্রে দীর্ঘক্ষণ পড়েছিলেন বৃদ্ধা। অবশেষে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রসঙ্গত, যে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বৃদ্ধার মৃত্যু হয়, সেখানে ময়নাতদন্তের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। তাই তাঁর দেহ সোরো শহরের জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে জেলা হাসপাতালের দূরত্ব তিরিশ কিমি।

বৃদ্ধের মৃতদেহটি নিয়ে যাওয়ার জন্যে কোনও অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন রেল পুলিশ সিদ্ধান্ত নেয় দেহটি ট্রেনে করে ওই জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু অটো-রিক্সা করে নিয়ে যাওয়া অনেক খরচসাপেক্ষ হওয়ায়, পুলিশকর্মীরাই এক ঝাড়ুদারকে বলে দেহটি কোনও ভাবে স্টেশনে পৌঁছে দিতে। সেসময় বৃদ্ধার দেহ শক্ত হয়ে গিয়েছিল। তখন ঝাড়ুদার দু কিমি পথ নিয়ে যাওয়ার জন্যে দেহটি নীচের অংশ থেকে ভেঙে দুভাগ করে, প্লাস্টিকের ব্যাগে পুরে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে নিয়ে যায়।

বৃদ্ধার ছেলে রবীন্দ্র বারিক এই দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান। তিনি এই ঘটনার বিচার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও গেছেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে ওড়িশার মানবাধিকার কমিশন রেল পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এধরনের আচারণের জবাবদিহি তলব করেছে।

অথচ ওড়িশা সরকারের তরফে এই ধরনের অনগ্রসর এলাকার মানুষদের সাহাযার্থ্যে না না প্রকল্পের ব্যবস্থা করেছে। এই ঘটনার কথা জানার পর মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাগ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।