নয়াদিল্লি: ৫০০ ও ১০০০ টাকার পুরনো নোট প্রত্যাহার করার কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী’ বলে উল্লেখ করলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।


এদিন দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণে এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই দেশজুড়ে পুরনো ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করার ঘোষণা করেন তিনি। মোদী জানান, দেশে বাড়তে থাকা কালো টাকা, দুর্নীতি এবং জালনোটের জালকে ছিঁড়তেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়েছে।

কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেন রাষ্ট্রপতি। প্রণববাবু বলেন, মোদী তাঁকে সন্ধ্যেবেলা ফোন করে গোটা বিষয়টির সম্পর্কে অবগত করেছেন। কেন্দ্রের ‘সাহসী সিদ্ধান্তকে’ স্বাগত জানিয়ে প্রণববাবু বলেন, এর ফলে কালো টাকার বাড়বাড়ন্ত বন্ধ হবে। একইসঙ্গে, জালনোটের ওপর বেড়ি পরানো সম্ভব হবে।

এদিন দেশবাসীকে অকারণে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে আশ্বস্ত করেন প্রণব। বলেন, কেন্দ্রের পেশ করা নির্দেশ মেনে চললে, কোনও সমস্যা পড়তে হবে না। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে কালো টাকার তদন্তে গঠিত সিট। সিট চয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম বি শাহ বলেন, এবার যারা ঘরে কালো টাকা গচ্ছিত করে রেখেছে, তারা বিপদে পড়বে।

কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেছে বিজেপি। এদিন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ মোদীর সিদ্ধান্তকে কালো টাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে যেমন কালো টাকা, হাওয়ালা, এবং জালনোট বন্ধ হবে, তেমনই মধ্যবিত্ত, নব্য-মধ্যবিত্ত ও গরিব শ্রেণির মানুষরা উপকৃত হবেন। কারণ, লম্বা দৌড়ে এই সিদ্ধান্তের ফলে তাঁদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হবে।

সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। তিনি বলেন, কালো টাকা নিকেশে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পাশাপাশি, দুর্নীতি রোধের ক্ষেত্রেও এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে শুভেচ্ছাও জানান। প্রসঙ্গত, তিন বছর আগে, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করার দাবি তুলেছিলেন নাইডু।

তবে, সকলেই যে খুশি তেমনটা নয়। কালো টাকা উদ্ধারে কেন্দ্রের সঙ্গে সহমত দেখালেও প্রধানমন্ত্রীর এই আচমকা সিদ্ধান্ত ঘোষণার সমালোচনা করেছে কংগ্রেস ও সিপিএম। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, কেন্দ্রের এই আচমকা সিদ্ধান্তে ছোট ব্যবসায়ী থেকে গৃহবধুরা সমস্যায় পড়বেন।

তাঁর মতে, বাস্তব পরিস্থিতি না খতিয়ে দেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এতে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হবে। একই মত পোষণ করেছেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমও। তাঁর মতে, আড়াই বছর চুপ করে থাকার পর হঠাৎ করে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করার কোনও মানে হয় না।