নয়াদিল্লি: গোরক্ষার নামে দিকে দিকে স্বঘোষিত গোরক্ষকদের তাণ্ডবের অভিযোগ ঘিরে বিতর্কের মধ্যেই দেশে গরুদের জন্য আধারের ধাঁচে বিশেষ শনাক্তকরণ নম্বর চালু করতে চায় বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে কেন্দ্র। শীর্ষ আদালতে সরকার বলেছে, দেশের প্রতিটি গরু ও তার বাছুরের শনাক্তকরণ, নজরদারির জন্য ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর চাই।


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বাধীন এক কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কেন্দ্রের তৈরি রিপোর্টে গোরক্ষা ও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গরু পাচার ইস্যুতেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রিপোর্টে দেশের প্রতিটি জেলায় অন্তত ৫০০ আশ্রয়হীন পশুর জায়গা হতে পারে, এমন একটি করে শেল্টার হোম বানাতে বলা হয়েছে। এর ফলে দেশে গরু চোরাচালান কমাতে সুবিধা হবে।

একটি প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টে প্রকাশ, লাখখানেক টেকনিশিয়ানকে দেশের সর্বত্র পাঠানো হয়েছে ৫০ হাজার ট্যাবলেট দিয়ে। তাঁদের কাজ ৮ কোটির বেশি  গরু, মহিষের প্রতিটির কানের ভিতরে একটি পলিইউরেথান ট্যাগ বসিয়ে দেওয়া। ওই ট্য়াগ কোনও ভাবেই খুলে ফেলা সম্ভব নয়, বিকৃতও করা যাবে না, বহু বছর একইরকম থাকবে। ট্যাগে ১২ ডিজিটের একটি নম্বর বসানো রয়েছে। ট্যাগের মাধ্যমে সব গরু, মহিষকে খুঁজে বের করে সময়মতো প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। যাতে সেই গরু, মহিষ থেকে অনেক বেশি দুধ পাওয়া যায়, তারা বংশবৃদ্ধি করতে পারে, সেজন্য দরকারি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিও কাজে লাগানো হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লক্ষ্য, ২০২২ সাল নাগাদ ডেয়ারির সঙ্গে জড়িত চাষিদের আয় বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা। সে কারণেই এই উদ্যোগ। পাশাপাশি সঙ্কটে পড়া কৃষকের সুরাহার কথা ভেবে তৈরি প্রকল্পে দুধ দেওয়ার বয়স পেরনো গরুর বিশেষ যত্ন নেওয়ার সুপারিশও করেছে কেন্দ্র।

জনৈক সরকারি অফিসার জানিয়েছেন, থার্মোপ্লাস্টিক পলিইউরাথেন ইলাস্টোমার থেকে তৈরি হলুদ রঙের এই ট্যাগের ওজন মাত্র ৮ গ্রাম, যাতে গরুর কোনও অসুবিধা না হয়। একেকটি ট্যাগের দাম ৮ টাকা। ট্যাগ বসানো হয়ে  গেলে টেকনিশিয়ান ট্যাবলেটে সেই নম্বর অনলাইনে একটি ডেটাবেসে তুলে দেবেন। গরুর মালিককে দেওয়া হবে একটি অ্যানিম্যাল হেলথ কার্ড। তাতে থাকবে মালিকের বিস্তারিত তথ্য, শনাক্তকরণ নম্বর সহ যাবতীয় তথ্য।

ট্যাগ সংগ্রহ, লাগানোর যন্ত্র কেনা, ট্যাবলেট, হেলথ কার্ড-সব মিলিয়ে ১৪৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র।