নয়াদিল্লি: মাত্র কয়েক মাস আগে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন নাসির খান জানজুয়া। ভারতের এনএসএ অজিত দোভালের সঙ্গে তাঁর বেশ সখ্যতা গড়ে উঠেছে। আর এই ঘনিষ্ঠতার কারণ সিগারেট!
দায়িত্ব গ্রহণের পর  ব্যাঙ্ককে দোভালের সঙ্গে হঠাত্ই দেখা হয়ে যায় জানজুয়ার। এরপর পাঠানকোট হামলা পরবর্তী সময়ে প্যারিসে। দোভাল জয়েশ-ই-মহম্মদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। জানা গেছে, দুই এনএসএ-র মধ্যে কূটনৈতিক কারণ ছাড়াও সিগারেটের সূত্রে বেশ ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে। নিছক সরকারি সম্পর্কের বাইরে ব্যক্তিগত স্তরে সেতুবন্ধন ঘটিয়েছে সিগারেট।
দোভাল ও জানজুয়া দুজনেই চেন স্মোকার। সিগারেটে টান দিতে গিয়েই দুজনের সখ্যতার জন্ম। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে এবিপি আনন্দ জানতে পেরেছে, ব্যাঙ্ককে বৈঠকের সময় থেকেই দুজনে দুজনের এই অভ্যেস সম্পর্কে জানতে পারেন। এই নিয়ে চোখের ইশারাতেই তাঁরা মিটিং রুম থেকে বেরিয়ে সিগারেটে টান দিতে দিতেই দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেন।
এ কথা তো এখন জানা যে, মোদী সরকারের আমলে ভারত-পাক আলোচনা এনএসএ পর্যায়েই হয়ে থাকে। দুই এনএসএের মধ্যে টেলিফোনে কথপোকথন হয়।
সূত্রের খবর, ভারতের এনএসএ যে ব্র্যান্ডের সিগারেট খান সেই ভারতীয় ব্র্যান্ডের প্রতি তাঁরও ধীরে ধীরে আসক্তি বেড়েছে বলে এক পাক কূটনীতিককে জানিয়েছেন জানজুয়া। মনে করা হচ্ছে, ব্যাঙ্ককে বৈঠকের পর ওই ব্র্যান্ডের সিগারেট জানজুয়াকে দিয়েছিলেন দোভাল। এরপর থেকেই সেই ব্র্যান্ডে মজেছেন জানজুয়া।
এখন দেখার দুই এনএসএ-র সখ্যতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব ফেলতে পারে কিনা। এর আগে কিন্তু অটল বিহারী বাজপেয়ী ও নওয়াজ শরিফ এবং মনমোহন সিংহ ও ইউসুফ রাজা গিলানির ব্যক্তিগত সম্পর্ক কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও সাফল্য আনতে পারেনি।


উল্লেখ্য, সরতাজ আজিজের পরিবর্তে জানজুয়াকে এই পদে বেছে নেওয়া হয়েছে। আজিজ অবশ্য পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিদেশ নীতি সংক্রান্ত পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে, প্রাক্তন সেনা অফিসার জানজুয়াকে এনএসএ হিসেবে নিয়োগের কাজটা একেবারেই সহজ ছিল না। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, তাঁর নিযুক্তির ক্ষেত্রে অন্যতম কারণ ছিল ভারত। কারণ, ভারত বরাবরই দাবি করে, পাকিস্তানের নির্বাচিত সরকারের হাতে প্রকৃত ক্ষমতা নেই। সেজন্যই প্রাক্তন সেনা অফিসারকে এনএসএ নিয়োগ করে পাকিস্তান ভারতের অভিযোগের পাল্টা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। জানজুয়া সেদেশের নির্বাচিত সরকার ও সর্বশক্তিমান সেনাবাহিনীর মধ্যে সংযোগসূত্র হিসেবে কাজ করছেন।