নয়াদিল্লি: একদিকে এনএসজি-তে ভারতের প্রবেশ আটকে দেওয়া। অন্যদিকে জইশ ই মহম্মদ পান্ডা মাসুদ আজহারের ওপর রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা বসতে না দেওয়া। চিনের এই দুই পদক্ষেপে পরিষ্কার, দিল্লি-বেজিং সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। কিন্তু এবার সম্ভবত ভারত ঠিক করেছে, আর মুখ বুজে চিনা দাদাগিরি সইবে না তারা, ইটের জবাব দেবে পাটকেলে।


গত মাসে ভারত সরকার সিঙ্গাপুরকে প্রস্তাব দিয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগরে চিনা অধিকার খারিজ করে দিয়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যাল যে রায় দিয়েছে, তার স্পষ্ট উল্লেখ করে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করুক দু’দেশ। সিঙ্গাপুর তাতে রাজি না হলেও ভারতের অবস্থানে এটা স্পষ্ট, চিনের চোখে চোখ রেখে দাঁড়ানোর সাহস তারা অবশেষে অর্জন করতে পেরেছে।

দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে বিতর্কে নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করছে সিঙ্গাপুর। কিন্তু ওই প্রসঙ্গে চিনকে কোণঠাসা করার চেষ্টা ছাড়তে রাজি নয় ভারত। ট্রাইবুন্যালের রায় চিন অগ্রাহ্য করলেও জাপানের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি রাখতে চায় দিল্লি। দক্ষিণ চিন সাগরে চিন-জাপান সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী। ফলে জাপানের সঙ্গে এ ব্যাপারে বিবৃতি প্রকাশ করলে চিনকে আরও কঠোর বার্তা দেওয়া যাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন জাপান সফরে জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রকাশিত হবে ওই বিবৃতি। জাপান প্রকাশ্যেই জানিয়েছে, তারা চায়, দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে ভারত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানাক।

আসলে যেভাবে চিন পূর্ব চিন সমুদ্রেও জাপানের সার্বভৌমত্ব চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করছে, তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন টোকিও। জাপানের দখলে থাকা সেনকাকু দ্বীপ নিজেদের বলে দাবি করেছে তারা। আর এই আন্তর্জাতিক দড়ি টানাটানির সময় ভারতকে পাশে রাখার জন্য জাপান রীতিমত আগ্রহী। এমনকী এ জন্য ভারতে তারা যে ইউএস-২আই যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে চেয়েছে, তার দাম কমানোরও ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে।

দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের আর এক প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের সঙ্গে প্রথম এমন বিবৃতি প্রকাশের কথা ভাবে ভারত। সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর হ্যানয় সফরে যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, তাতে সমুদ্রের ওপর উড়ানের স্বাধীনতা ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার গতানুগতিক প্রসঙ্গ ছাড়াও দক্ষিণ চিন সাগরে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যালের রায়েরও উল্লেখ ছিল।