ভূবনেশ্বর:  এই বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ওড়িষ্যার পটনাগড়ে এক নবদম্পতিকে বিয়ের উপহারে পার্সেল বোমা দিয়ে গিয়েছিলেন কোনও এক অতিথি। সেই বোমা ফেটে মৃত্যু হয় পাত্র এবং তাঁর ঠাকুমার। গুরুতর জখম হন পাত্রী। এরপরই এই মর্মান্তিক ঘটনার পিছনে কে রয়েছে তার সন্ধানে তদন্তে নামে পুলিশ।

 

বুধবার ওড়িষ্যা পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা এই বোমা উপহার দেওয়ার পিছনে যে মূল চক্রী ছিলেন তাঁকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত কলেজের শিক্ষক। পুলিশ সূত্রে দাবি, গত আট মাস ধরে পরিকল্পনা করে ওই ব্যক্তি এই কাজটি করেছেন। মূলত প্রতিশোধ নিতেই কাজটি করে ওই কলেজ শিক্ষক।

পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে অভিযুক্ত পুঞ্জিলাল মেহরের পাত্রের মায়ের ওপর রাগ ছিল। তাঁরা দুজনেই এক কলেজে শিক্ষকতা করতেন। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে জ্যোতি বিকাশ জুনিয়র কলেজের প্রিন্সিপ্যালের পদে বসার ইচ্ছে ছিল পুঞ্জিলাল মেহরের। কিন্তু সেই পদে বসেন পাত্রের মা সংযুক্তা সাহু। তারপর থেকে প্রতিশোধের পরিকল্পনা করতে শুরু করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। তবে এই বিষয় এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ, যে উপহারটি সেদিন নবদম্পতিকে দেওয়া হয়েছিল, না পাত্রের বাবা-মাকে।

দিওয়ালির সময় বাজি কিনে এনে গান পাউডার দিয়ে দু কেজির বোমা তৈরি করেন ওই শিক্ষক। এরপর ওই বিয়ের অনুষ্ঠানের দিন নিজের উপস্থিতি কলেজে বোঝানোর জন্যে একটি ক্লাসও নেন তিনি। তারপর টিকিট ছাড়া রায়পুরের ট্রেনে উঠে পড়েন অভিযুক্ত। এরপর সিসিটিভি এড়াতে, এক অটো চালককে তিনি নিয়োগ করেন পার্সেলটি কুরিয়ার সার্ভিসকে দেওয়ার জন্যে।

পাত্রের বাবা জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী ২০১৪ সালে ওই কলেজে যোগ দেন। সেই সময় থেকেই সমস্যার শুরু। সিনিয়র হওয়ায় তাঁর স্ত্রীই কলেজ প্রিন্সিপ্যাল হওয়ার জন্যে যোগ্য প্রার্থী ছিলেন ওই পদের জন্যে। কিন্তু নানা ভাবে সমস্যা তৈরি করে, অসম্মান করতে থাকেন ওই শিক্ষক, পাত্রের মা সংযুক্তাকে। তবে ছেলের বিয়েতে সেসব ভুলে সমস্ত কলেজ স্টাফদের সঙ্গে ওই ব্যক্তিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারপরই ঘটে ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।