নয়াদিল্লি: বুধবার সপ্তদশ লোকসভায় শাসক-বিরোধী সর্বসম্মতিতে স্পিকার নির্বাচিত হলেন রাজস্থানের কোটা থেকে জয়ী বিজেপি সাংসদ ওম বিড়লা। বিগত এক দশকে লোকসভায় স্পিকার পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন দুই মহিলা সাংসদ। প্রথম জন মীরা কুমার এবং দ্বিতীয় জন সুমিত্রা মহাজন। এবার আর সেই ট্র্যাডিশন অনুসরণ করা হয়নি। এদিন মোদি ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ওম বিড়লাকেই লোকসভার অধ্যক্ষ পদের জন্য প্রস্তাব করে কেন্দ্রের শাসক দল। কংগ্রেস, ডিএমকে ও তৃণমূলের মতো বড় দলগুলো ৫৬ বছরের এই বিজেপি সাংসদের অধ্যক্ষ পদে বসার সেই প্রস্তাবকে সমর্থনও করে। যার ফলে কোনও বাধা ছাড়াই স্পিকারের পদে বসতে সক্ষম হন ওম বিড়লা।
নতুন অধ্যক্ষ নির্বাচনের পর তাঁকে অভিবাদন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নবনির্বাচিত অধ্যক্ষ ওম বিড়লার পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “ওম বিড়লা একজন তৃণমূল স্তরের নেতা। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের থেকেও তাঁর বড় পরিচয়, তিনি একজন সমাজকর্মী। যখনই সামাজিক সঙ্কট দেখেছেন, সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।”
নরেন্দ্র মোদি আরও বলেন, “গুজরাতের ভূমিকম্পের সময় তিনি সমাজসেবার কাজ করেছেন। কেদারনাথেও গিয়েছেন। সঙ্কটে মানুষের পাশে থেকেছেন। কোটায় প্রবল শীতে ঘরে ঘরে কম্বল বিতরণ করেছেন তিনি। গরিব মানুষের মুখে আহার তুলে দিয়েছেন। ‘পরিধান’ যোজনা করে বস্ত্রহীনদের বস্ত্র দিয়েছেন।” মোদির কথায়, নবনির্বাচিত অধ্যক্ষ জনআন্দোলনের থেকেও বেশি জনসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস, ওম বিড়লা আজ থেকে যে পদে বসলেন, সেই কাজ দায়িত্বের সঙ্গে পালন করবেন। বুধবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নতুন অধ্যক্ষকে আশ্বস্ত করেন, তাঁর কাজ সহজ করার জন্য সর্বদা চেষ্টা করবেন। তিনি এও বলেন, যদি কখনও শাসক তাঁর দায়িত্ব কর্তব্য থেকে সরে আসে, সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে কঠোর হতেও যেন স্পিকার দ্বিতীয়বার না ভাবেন।
প্রসঙ্গত, ওম বিড়লা সর্বপ্রথম ২০০৩ সালে রাজস্থানের বিধানসভায় বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮ ও ২০১৩ সালেও বিধানসভার সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে প্রথম লোকসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং জয়ী হন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও রাজস্থানের কোটা থেকে বিজেপি প্রার্থী হন তিনি এবং এবারও কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয় বিজয়ী হন। ষোড়শ লোকসভার পরিসংখ্যান অনুযায়ী গতবার সংসদে তাঁর উপস্থিতির হার ছিল ৮৬ শতাংশ। সেই সমস্ত সাংসদদের মধ্যে ওম বিড়লা ছিলেন অন্যতম যারা লোকসভায় দেড়শোর বেশি বিতর্কে সামিল হয়েছেন। সংসদে ৬৭১টি প্রশ্নও করেছেন এই বিজেপি সাংসদ। দ্বিতীয়বার পুনর্নিবাচিত হয়ে আসার পর এবার তিনি স্পিকারের পদে বসলেন।