নয়াদিল্লি: পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি ভারতীয় সেনাপ্রধানের। কারগিল যুদ্ধের ২০-তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে শনিবার এক সেমিনারে তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতের লড়াই-সংঘাত, সংঘর্ষ হবে আরও বেশি হিংসাত্মক ও অপ্রত্যাশিত, যার সম্পর্কে কোনও আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করা যাবে না। প্রযুক্তি, সাইবার গোয়েন্দাগিরির বড় ভূমিকা থাকবে এবং সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষের কী হবে, সেটা মাথায় রাখবে না।
জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেন, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ছায়াযুদ্ধ, রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাস বা অনুপ্রবেশের মাধ্যমে বারবার হঠকারী আচরণ করছে। এবার এ ধরনের যে কোনও হঠকারিতার পাল্টা শাস্তিমূলক জবাব পাবে। জওয়ানরা আমাদের প্রকৃত সম্পদ, সেটাই থাকবেন।ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী আমাদের এলাকাগত সংহতি, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। হঠকারিতার উপযু্ক্ত জবাব মিলবে। এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আগামীদিনের লড়াইয়ের প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে প্রযুক্তি। রাষ্ট্র-বহির্ভূত শক্তিগুলির উত্থান ও সন্ত্রাস, লড়াইয়ের অন্যান্য অপ্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহারের প্রবণতা নতুন স্বাভাবিক রীতি হয়ে উঠছে।
২০১৬ ও ২০১৯-এ ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ব্যাপারেও তিনি বলেন যে, দেশ সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় যে রাজনৈতিক শপথও নিয়েছে, সেটাই দেখিয়েছে ওই আক্রমণ।

সেমিনারের আয়োজন করে সেন্টার অব ল্যান্ড ওয়ারফেয়ার স্টাডিজ। সেনাপ্রধান কারগিল সংঘর্ষের শিক্ষা, অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন।

১৯৯৯-এর মে-জুনে ভারত, পাকিস্তান কারগিল যুদ্ধে জড়ায়। পাক সেনারা নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছিল। টোলোলিং হাইটস, টাইগার হিল পয়েন্ট ৪৮৭৫ ( বাটরা টপ) সহ কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শৃঙ্গ দখল করে নেয়। পাল্টা ‘অপারেশন বিজয়’ অভিযানে নামে ভারতীয় সেনাবাহিনী। তীব্র সংঘর্ষের পর দখলদার বাহিনীকে হঠিয়ে এলাকা পুনর্দখল করে তারা। বলা হয়, অতি উচ্চ পাহাড়ি এলাকায় সামরিক সংঘর্ষের ইতিহাসে সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধগুলির একটি কারগিল সংঘর্ষ।

এদিকে লাদাখের ডেমচক সেক্টরে চিনা সেনাবাহিনীর অনুপ্রবেশের খবরও অস্বীকার করেন সেনাপ্রধান। গত ৬ জুলাই তিব্বতী ধর্মগুরু দলাই লামার জন্মদিন উপলক্ষ্যে কিছু তিব্বতী স্বাধীন তিব্বতের পতাকা তোলার পর চিনা সেনারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করেছিল বলে যে খবর ছড়িয়েছে, তারই প্রেক্ষিতে সেনাপ্রধান বলেন, কোনও অনুপ্রবেশই হয়নি। চিনারা যাকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা মনে করে, সেখানে আসে, টহল দেয়। আমরা তাদের ঠেকাই। কিন্তু কখনও কখনও স্থানীয় স্তরে আনন্দ, উত্সব হয়। ডেমচক সেক্টরে আমাদের দিকে তিব্বতীরা উত্সব করছিলেন। তখনই কিছু চিনাও এগিয়ে এসে কী হচ্ছে, দেখার চেষ্টা করে। তবে ভিতরে ঢোকার কোনও ঘটনা ঘটেনি। সব কিছুই স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিতর্ক আছে। ২০১৭-য় ৭৩ দিন ধরে ডোকালামে সংঘাতে জড়িয়েছিল দুদেশের সেনাবাহিনী।