নয়াদিল্লি: রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর পদে রঘুরাম রাজন পুনর্বহাল হতে না চেয়ে সরে দাঁড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার জন্য কেন্দ্রর শাসক দলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলল বিরোধীরা। কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজন যাতে সরে যান, তার জন্য লবি করেছে বিজেপি ও আরএসএস-এর একাংশ।

এদিন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বীরাপ্পা মইলি জানান, রাজনের মত একজন দক্ষ ব্যক্তিত্বকে পাওয়ার যোগ্য নয় বর্তমান শাসক দল। তিন বলেন, যে ভাবে কয়েকজন বিজেপি মুখপাত্র, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ ও সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এবং নাগপুরের আরএসএস শিবিরের থেকে রাজনের বিরুদ্ধ লবি করছে, তা অকল্পনীয়। মইলি যোগ করেন, দেশের পক্ষে এটি অত্যন্ত অমঙ্গলজনক অধ্যায়।

কংগ্রেসের সুরে সুর মিলিয়ে কেন্দ্রকে একহাত নিয়েছে আরজেডি-ও। দলের মুখপাত্র মনোজ ঝা বলেন, গভর্নর হিসেবে রাজন যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা দেশবাসী বেশ নিশ্চিন্ত অনুভব করতে শুরু করেছিলেন। তিনি যোগ করেন, যদি কাউকে এভাবে অনৈতিকভাবে আক্রমণ করা হতে থাকে, তাহলে রাজনের মতো ব্যক্তিত্বর কী বা করতে পারেন।

সূত্রের খবর, বাস্তববাদী রাজনের সোজা কথা কেন্দ্র সরকারের শীর্ষ মহলের অনেকেরই হজম হয়নি। অভিযোগ, আসলে রঘুরাম রাজন আরএসএস-এর পছন্দের পাত্র ছিল না। আর তাই, রঘুরাম রাজনকে সরানোর রাস্তা প্রশস্ত করতেই আরএসএস-এর নির্দেশে ময়দানে নেমেছিলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। যাকে সম্প্রতি রাজ্যসভায় এনেছে মোদী সরকার। বিজেপি সাংসদ স্বামী তো রীতিমতো মোদীকে চিঠি দিয়ে রাজনকে সরাতে বলেছিলেন। কখনও রাজনের গ্রিন কার্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কখনও রাজনের বিরুদ্ধে অর্থনীতিকে বেহাল করার অভিযোগ এনেছেন!

রাজন বড় বড় শিল্পপতি, যাঁরা ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ না করে ফূর্তি করে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে শিল্পমহলের ইচ্ছা মতো সুদের হার কমানোর পথেও হাঁটেননি রাজন। রঘুরাম রাজনের এইসব কড়া সিদ্ধান্তও অনেকে ভাল চোখে দেখেননি বলে মত সূত্রের। তাই শেষপর্যন্ত সরছেন রাজন।

রাজনের বিদায়ের জন্য মোদী সরকারের দিকে আঙুল তুলে রাহুল গাঁধী শনিবারই ট্যুইট করেছেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব জানেন। রঘুরাম রাজনের মতো বিশেষজ্ঞকে তাঁর প্রয়োজন নেই। ডক্টর রাজনকে ধন্যবাদ। তিনি বিপদের সময়ে দেশের অর্থনীতির হাল ধরেছেন। আপনার মতো মানুষই দেশকে মহান বানায়। দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম ট্যুইট করেছেন, একজন দুর্দান্ত অর্থশাস্ত্রীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আর ছেলেমানুষিসুলভ হামলার মাধ্যমে মোদী সরকার এই পরিস্থিতি ডেকে আনল।