নয়াদিল্লি: ভর্তুকিতে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক কেন? প্রশ্ন তুলে রাজ্যসভায় তুমুল হই-হট্টগোল বিরোধীদের। একযোগে সরব তৃণমূল-সিপিএম-কংগ্রেস। দফায় দফায় মুলতুবি অধিবেশন। আধার বাধ্যতামূলক হয়নি। সব গ্রাহকের আধার কার্ড না হওয়া পর্যন্ত, রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি থেকে কাউকে বঞ্চিত করা হবে না। চাপের মুখে জানাল কেন্দ্র।
রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি থেকে স্কলারশিপ। সবেতেই লাগবে আধার কার্ড। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের জেরে সমস্যায় পড়েছে সাধারণ মানুষ।
এমন বহু মানুষ আছে, যাদের এখনও আধার কার্ড হয়নি! তাহলে যাঁর আধার কার্ড নেই, তিনি এইসব পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন? ভর্তুকি পাওয়ার অধিকার তাঁদের নেই? একশো শতাংশ আধার কার্ড না হওয়া পর্যন্ত মোদী সরকার এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কেন? প্রশ্ন বহু সাধারণ মানুষেরই।
এই অবস্থায় যেদিন মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে লোকসভা সুর চড়ালেন রাহুল গাঁধী, সেদিনই আধার কার্ডের মতো আরও একটি ইস্যু, যার সঙ্গে জড়িয়ে দেশের কোটি কোটি মানুষের স্বার্থ, তাকে হাতিয়ার করেই রাজ্যসভায় হুলস্থুল ফেলে দিল বিরোধীরা।
বৃহস্পতিবার, রাজ্যসভার অধিবেশনের শুরুকেই আধার কার্ডকে বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয় কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, সমাজবাদী পার্টি, বিজেডি, জেডিইউ-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা।
ওয়েলে নেমে চলে বিক্ষোভ। বিরোধীদের সমবেত আক্রমণের মুখে পড়ে ঢোক গিলতে হয় মোদী সরকারকে। কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়নি। প্রয়োজনে নির্দেশিকা জারি করা হবে। আশ্বাস বাণী শোনা যায় কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের গলাতেও। তিনি বলেন, ৮৫ শতাংশ গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার কার্ড নম্বর যুক্ত করার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আগামি তিনমাসের মধ্যে বাকি গ্রাহকদেরও যুক্ত করা হবে। ততদিন কাউকেই রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি থেকে বঞ্চিত করা হবে না।
সম্প্রতি, আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে আধারকার্ডের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছিলেন, সবাইকে আধার দিয়ে দেওয়া হবে, মাধ্যমে ভর্তুকি দেওয়ায় সরকারি অর্থের সাশ্রষ হচ্ছে। কিন্তু, আধার কার্ড সবার না হওয়া পর্যন্ত, কীভাবে একে বাধ্যতামূলক করা সম্ভব? আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠক ও ২১ জুলাইয়ের বৈঠকে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, আমার রাজ্যে এক কোটি লোকের আধার নেই। আর তুমনি চালু করে দিচ্ছে!
এবার আধার ইস্যুতে অন্যান বিরোধী দলের আপত্তির মুখে পড়ে কিছুটা পিছু হঠতে হল মোদী সরকারকে।