নয়াদিল্লি: গোরক্ষকদের তাণ্ডব থেকে কৃষকদের প্রতিবাদ, কাশ্মীর অস্থিরতা থেকে দুর্নীতির মামলায় বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্তের বাড়বাড়ন্ত—এসব ইস্যুকে হাতিয়ার করে উত্তপ্ত হতে পারে সংসদের বাদল অধিবেশন। এমনই ইঙ্গিত দিল বিরোধী দলগুলি।
সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। তবে, সাংসদ-মৃত্যুর কারণে, আগামীকাল শুরু হয়ে প্রথামাফিক শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর দিনের মতো মুলতুবি হয়ে যাবে লোকসভা ও রাজ্যসভা। পুরোদমে উভয় কক্ষের কাজ শুরু হবে মঙ্গলবার।
রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা প্রবীণ কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদ রবিবার পরিষ্কার করে দেন, কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি কাশ্মীর এবং চিন ইস্যুতে কেন্দ্রকে আক্রমণ করবে।
কাশ্মীর-প্রসঙ্গে গুলাম নবি জানান, সরকার ‘আলোচনার সব রাস্তা বন্ধ’ করে দিয়েছে। যে কারণে, উপত্যকায় ‘রাজনৈতিক অস্বস্তির’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
তিনি মনে করেন, কাশ্মীর নিয়ে চিনের সঙ্গে মতবিরোধও বিরোধীদের কাছে এখন একটি আলোচ্য বিষয়। ডোকালাম সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রের কাছে বিতর্কের দাবি তুলবে বিরোধীরা।
দেশজুড়ে তথাকথিত গোরক্ষকদের তাণ্ডব নিয়েও আসন্ন বাদল অধিবেশনে সোচ্চার হতে চলেছে বিরোধীরা। এই ইস্যুতে কংগ্রেসের সঙ্গে একযোগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধাচরণ করবে বাম সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।
গো-মাংস ও গো-রক্ষা ইস্যুতে যে সংসদ উত্তাল হতে পারে, তার আগাম আঁচ পেয়ে এদিন সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান করেন, বিষয়টিকে রাজনৈতিক রং না দেওয়ার জন্য। মোদী বলেন, রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, গো-রক্ষার নামে যারা আইন নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে, তাদের মোকাবিলা কড়া হাতে করার জন্য।
এছাড়া, মোদী সরকারের আমলে কর্মসংস্থানের অভাব নিয়েও সোচ্চার হতে চলেছে বিরোধীরা। জেডিইউ নেতা শরদ যাদব ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন, এই ক্ষেত্রে কেন্দ্র পুরোপুরি ব্যর্থ। ফলে, তারা সংসেদ এই নিয়ে সরব হবেন।
বিরোধীদের ‘শেলিং’ সামলাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে শাসক দলও। কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, অর্থনীতি ও কৃষিক্ষেত্রে বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পূর্বতন সরকারের থেকে অনেকটাই এগিয়ে মোদী সরকার। যদিও, কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।
তাদের পাল্টা দাবি, কৃষি নিয়ে বর্তমান সরকারের পারফরম্যান্স কেমন তা দেশজুড়ে কৃষক-আত্মহত্যার ঘটনায় প্রমাণিত। কেন্দ্রীয় সংসদ-বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি জানান, বিরোধীরা সাম্প্রতিক কোনও ইস্যুতে বিতর্ক-আলোচনা চাইলে সরকার রাজি।
তবে, দুর্নীতি-প্রসঙ্গে বিরোধীদের আগাম ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়ে রেখেছে মোদী সরকার। এদিন নাম না করে তৃণমূল কংগ্রেস ও আরজেডি-কে আক্রমণ করে কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে, যদি কেউ মনে করে সিবিআই ও ইডি-র তদন্ত নিয়ে সংসদে হই-হট্টগোল করবে, তাহলে ট্রেজারি বেঞ্চও চুপ থাকবে না।