নয়াদিল্লি: সংসদে বিরোধীদের তোপের মুখে তরুণ বিজয়। গত সপ্তাহের গোড়ায় আল জাজিরা চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বিজেপির এই প্রাক্তন রাজ্যসভা সদস্যের বিরুদ্ধে জাতপাতগন্ধী মন্তব্যের অভিযোগ ঘিরে শোরগোল চলছে।   সাক্ষাত্কার নেওয়া সাংবাদিকদের একজন, আলোকচিত্রী মহেশ শান্তারাম বলেন, ভারতে বর্ণবিদ্বেষ নেই, এটা কী করে বলেন রাজনীতিবিদরা? বিদেশ থেকে আমাদের দেশে এসে যাঁরা বলেন, ভারতীয়দের মধ্যে বর্ণবিদ্বেষী মানসিকতা আছে, তাঁরা কি ভুল বলেন? জবাবে বিজয় বলেন, আমরা সবাই বর্ণবিদ্বেষী হলে কি দক্ষিণীদের সঙ্গে থাকতাম! তামিলনাড়ু, কেরল, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ। চারিদিকে কালো, কালো লোকজন। কী করে ওদের সঙ্গে আছি আমরা? এমনকী তিনি নাকি শান্তারামকে তিনি কোন দেশের মানুষ, প্রশ্ন করেন। শান্তারাম তাঁকে নিজের ভারতীয় পাসপোর্টটি বের করে দেখান।


সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত বিজয় ট্যুইটারে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টায় লেখেন, আমি বলতে চেয়েছিলাম, আমরা কৃষ্ণের পুজো করি। কৃষ্ণ মানে কালো। আমরাই প্রথম বর্ণবিদ্বেষের বিরোধিতা করি, আমরাই তো প্রথম ব্রিটিশ বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়েছি।

কিন্তু তাতে বিতর্ক থামেনি। লোকসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চেয়ে মুলতুবি প্রস্তাবের নোটিস দেয় কংগ্রেস, যদিও তা খারিজ করেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, জানতে চাই, আমরা কি ভারতীয় নই! বিজয়ের মন্তব্য দেশের ঐক্যের সামনে 'বিপদ" বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা দেশকে টুকরো করতে চান। বোঝাই যাচ্ছে, কী আপনাদের মানসিকতা। হিটলারের সঙ্গে তুলনা টেনে তিনি বলেন, বিজয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হোক। উনি দেশ ভাঙার উসকানি দিয়েছেন।

তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ পরিস্থিতি সামাল দিতে বলেন, ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। জাতপাত, ধর্ম, বর্ণের ভিত্তিতে কোনও বৈষম্য হয় না। বিজয়ের বলে জানিয়ে একটি বিবৃতি পড়ে শোনান তিনি। বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজেই বলেছেন, তাঁর মন্তব্যটি সমর্থনযোগ্য নয়। তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন। তাই এ নিয়ে হইচই করে লাভ কী?
রাজ্যসভায় সিপিআই নেতা ডি রাজা ঘুরিয়ে ইস্যুটি তুলে নিজেকে কালো চামড়ার দক্ষিণ ভারতীয় বলে উল্লেখ করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম না তুলেই তাঁর মন্তব্যের নিন্দা করেছি আমরা। ইতিমধ্যেই উনি ক্ষমা চেয়েছেন।