নয়াদিল্লি: হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর অশান্তি ছড়িয়েছে কাশ্মীরে। বিভিন্ন হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ১৪০০। চলতি সপ্তাহের শুরুতে একদল জনতা কুলগামের দামহাল হাঞ্জি থানায় হামলা চালিয়ে প্রায় ৭০ টি সেমি-অটোমেটিক ও অটোমেটিক অস্ত্র লুঠ করে। নিরাপত্তা বাহিনীর আধিকারিকরা বলছেন, ওই অস্ত্রগুলি শেষপর্যন্ত জঙ্গিদের হাতেই যাবে এবং তারা সেগুলি নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার জন্য ব্যবহার করবে। এই ধরনের ঘটনা নিরাপত্তা সংস্থাগুলির উদ্বেগ বাড়িয়েছে। সূত্রের খবর, কাশ্মীরে এই অশান্তির ঘটনায় হাত রয়েছে পাকিস্তানের।
আইবি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ১০০ কোটি টাকা পাকিস্তান থেকে কাশ্মীরে আসে হওয়ালার মাধ্যমে। জম্মু ও কাশ্মীরে অস্থিরতা তৈরির জন্যই এই অর্থের যোগান দেওয়া হয়। ওই অর্থ সরাসরি পৌঁছে যায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে। এর তা নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী তরুণদের মধ্যে বন্টন করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে যারা পাথর ছোঁড়ে তাদেরও কাছেও পৌঁছয় এই অর্থের ভাগ। গোয়েন্দা সংস্থাগুলির রিপোর্টে বলা হয়েছে, পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীকে নিশানা করে যে বিক্ষোভগুলি আয়োজিত হয়, সেগুলিতে প্রশিক্ষিত জঙ্গিরা অংশগ্রহণ করে। আইবি সূত্রে জানা গেছে, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এই বেআইনি অর্থ কাশ্মীরে পাঠায়। এই কাজে তারা হিজবুলের সুপ্রিম কমান্ডার সৈয়দ সালাউদ্দিন এবং জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদের জঙ্গি নেটওয়ার্ককে ব্যবহার করে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, আইএসআই আধিকারিকরা সম্প্রতি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সালাউদ্দিন, হাফিজ ও জইশ-ই-মহম্মদের কমান্ডার আব্দুল রউফের সঙ্গে বৈঠক করে। তারা কাশ্মীরে অশান্তি ও উত্তেজনা ছড়াতে চার নতুন কমান্ডার নিয়োগ করেছে। জম্মু ও কাশ্মীরে যারা অশান্তিতে ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের সঙ্গে সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারের জঙ্গিদের টেলিফোনে কথাবার্তা রেকর্ড করে এই তথ্য জানতে পেরেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। সীমান্তের ওপার থেকে উপত্যকার জঙ্গিদের বিক্ষোভচলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।
আইবি-র তথ্য হাতে পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভের সময় নজরদারি আরও জোরদার করেছে। বিক্ষোভের সময় জঙ্গিদের নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে হ্যান্ড গ্রেনেড ছোঁড়ার ঘটনা ক্যামেরাবন্দী করতে হাই-রেজোলিউশন ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।
এরইমধ্যে পাক সেনা বাহিনীর প্রধান জেনারেল রাহিল শরিফও কাশ্মীরে তরুণদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। এক্ষেত্রে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সুরেই সুর মিলিয়েছেন।