নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের জেলে ভারতীয় বন্দির মৃত্যু নিয়ে রহস্য, জল্পনার মধ্যেই এ নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিল নয়াদিল্লি। কয়েকদিন আগে লাহোর জেলে দেহ মেলে কৃপাল সিংহ নামে ভারতীয় বন্দির। সরকারের নির্দেশে পৃথক বিস্ফোরণ মামলায় চরবৃত্তির অভিযোগে প্রায় ২৫ বছর পাক জেলে কাটানো ৫০ বছর বয়সি  কৃপালের আচমকা মৃত্যুর বিষয়টি আজ ইসলামাবাদে পাক বিদেশমন্ত্রকে ডিরেক্টর জেনারেল (দক্ষিণ এশিয়া)-এর কাছে উত্থাপন করেন ভারতের অস্থায়ী হাই কমিশনার জে পি সিংহ। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১১ এপ্রিল দুপুর ২টা ৫৫-য় কৃপাল সিংহের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পাক সরকার। তাঁর দেহ যত দ্রুত সম্ভব দেশে পাঠানোর আয়োজন করতে পাক বিদেশ  মন্ত্রককে আবেদন করেছেন অস্থায়ী হাই কমিশনার। ভারত সরকারের তরফে কৃপালের মৃত্যু নিয়ে ধন্দ কাটাতে তদন্ত দাবি করা হয়েছে। অস্থায়ী হাই কমিশনারএ নিয়ে পাক বিদেশমন্ত্রকের কর্তার সঙ্গে কথা বলেন।

সরকার কৃপালের রহস্য-মৃত্যুর ব্যাপারে আরও তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান স্বরূপ।

পরে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দেখা করেন কৃপালের পরিবারের সদস্যরা। ট্যুইট করে সুষমা বলেন, বিষাদগ্রস্ত এক পরিবারের মানসিক যন্ত্রণা লাঘবের চেষ্টা করছি। আমি @সুষমা স্বরাজ পাকিস্তানে মারা যাওয়া কৃপাল সিংহের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি।

ওই পরিবারকে তিনি এও জানান, দু দেশের কারাগারে থাকা উভয় দেশের লোকজনের সামগ্রিক কল্যাণ ও তাঁদের সামগ্রিক অবস্থা খতিয়ে দেখতে ভারত-পাক বিচারবিভাগীয় কমিটির পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা করবে ভারত। গত কয়েক বছর ধরে ওই কমিটির বৈঠক হচ্ছে না।

 

১৯৯২ সালে ওয়াগা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার হন কৃপাল। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে সিরিয়াল বিস্ফোরণ মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও গুরদাসপুরের লোক কৃপালকে বিস্ফোরণে জড়িত থাকার যাবতীয় অভিযোগ থেকে রেহাই দেয় লাহোর হাইকোর্ট, কোনও এক অজ্ঞাত কারণে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের সাজাও রদ হয়নি।

কৃপালের বোন  জাগির কৌর আগে বলেছিলেন, আর্থিক সঙ্গতি ছিল না বলে ভাইয়ের মুক্তির ব্যাপারে তেমন কিছু করতে পারেননি তাঁরা। কোনও রাজনৈতিক নেতাও এগিয়ে আসেননি।

 

গতকাল ভারত-পাকিস্তান আত্তারি সীমান্তে কৃপালের মৃত্যু নিয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ দেখান তাঁর বাড়ির লোকজন। তাঁদের  সঙ্গে যোগ দেন সর্বজিত্ সিংহের বোন দলবীর সিংহ। লাহোরের কোট লাখপত জেলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় বন্দি সর্বজিত্কে।