কলকাতা ও নয়াদিল্লি: পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আবারও জল গড়াল আদালতে। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করল কংগ্রেস। সুপ্রিম কোর্টে মামলা করল বিজেপি। দু’টি মামলাই শুনানি হতে পারে শুক্রবার।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকেই জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে লাগামছাড়া অশান্তি। চলছে গুলি, পড়ছে বোমা। ঝরছে রক্ত, যাচ্ছে প্রাণ। এই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে একটি মামলা নথিভুক্ত করেছে রাজ্য বিজেপি।
সূত্রের দাবি, সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ তুলে তারা আর্জি জানিয়েছে, অশান্তি রুখতে অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। আর ভোটে শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হোক।
বিজেপির অভিযোগ, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ওপর ব্যাপক অত্যাচার শুরু করা হয়েছে। তিনি সম্প্রতি এক দলিত নেতার খুনের প্রসঙ্গ তুলে অভিযোগ করেছেন যে, রাজ্যের তৃণমূল শাসিত সরকার বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে।
বিজেপির দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করতে চাইছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র অভিযোগ, গত ২ এপ্রিল পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শুরু হওয়ার পর বিজেপি সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। বাবুল জানিয়েছেন, এর প্রতিবাদে আজ রাজঘাটে মিছিল করবে বিজেপি এবং আগামীকাল সংসদে ধরনা দেওয়া হবে।
বাবুল আরও অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের কর্মীদের বলেছেন যে, তিনি চান অর্ধেকের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতুক দলের প্রার্থীরা। সেজন্যই তৃণমূল রাজ্যে গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরতে চাইছে। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এএম খানউইলকর এবং ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে গঠিত একটি বেঞ্চে আগামীকাল মামলার শুনানি হবে।
অন্যদিকে, কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে করা এই মামলায় তিনি মূলত তিনটি আবেদন জানিয়েছেন। প্রয়োজনে পুরো ভোট প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়া হোক। শুধু বিডিও অফিসের বদলে ডিএম অফিস ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসেও মনোনয়ন দাখিলের ব্যবস্থা করা হোক। ভোটের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী আনা হোক।
তৃণমূল অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগে গুরুত্ব দিতে নারাজ। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজভবনের বাইরে। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি মিথ্যাচার করছে। ভুল তথ্য দিচ্ছে।
গতবারও পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে হাইকোর্টে যায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পরে সেই মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। এবারও ভোটের জল গড়াল সেই দুই আদালতে।