নয়াদিল্লি: দেশভাগের সময় যাঁরা ভারত ছেড়ে পাকিস্তান ও চিনে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের উত্তরসূরীরা এদেশে পূর্বপুরুষদের থেকে যাওয়া বা ফেলে যাওয়া সম্পত্তির ওপর দাবি রাখতে পারবেন না। মঙ্গলবার সংসদে এই মর্মে পাশ হল শত্রু সম্পত্তি বিল।


পুরো নাম- শত্রু সম্পত্তি (সংশোধনী এবং বৈধকরণ) বিল, ২০১৬। নতুন বিলটি ৪৯ বছর আগে পাশ হওয়া এনিমি প্রপার্টি অ্যাক্ট, ১৯৬৮-এর স্থলাভিষিক্ত হল।


প্রসঙ্গত, বিলটি লোকসভায় আগেই পাশ হয়েছিল। কিন্তু, রাজ্যসভার স্থায়ী কমিটি বিলে কিছু সংশোধন করে পাশ করে। ফলে, তা ফের লোকসভায় আসে। এদিন নিম্নকক্ষে ধ্বনিভোটের মাধ্যমে সংশোধিত বিলটি পাশ হয়।


বিল অনুযায়ী, কোনও সম্পত্তি যদি শত্রুর তরফে, শত্রু-ব্যক্তিবিশেষ বা শত্রু-সংস্থার দ্বারা দখল বা পরিচালিত হয়, তাই ‘শত্রু-সম্পত্তি’ হিসেবে গণ্য হবে।


এবার থেকে এই সব সম্পত্তির মালিকানা চলে আসবে কেন্দ্রের হাতে। এর জন্য ভারতে শত্রু-সম্পত্তির জিম্মাদার হিসেবে একটি পৃখক দফতর গঠন করা হয়েছে। তারাই শত্রু-সম্পত্তি সামলাবে।


তবে বিলে এ-ও বলা হয়েছে, এই আইন কেবলমাত্র শত্রু-উত্তরাধিকার বা ওয়ারিশদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এধরনের শত্রু-সম্পত্তিতে কোনও ভাড়াটে থাকলে, তাঁদের ওপর এই আইন প্রযোজ্য হবে না। সেক্ষেত্রে ভাড়াটে আইন দিয়ে বিচার হবে।


এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানান, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের পরে প্রথমবার এই বিল আনা হয়েছিল। নতুন বিলে তাতে সংশোধন করা হয়েছে।


বিলে বলা হয়েছে, শত্রু-সম্পত্তির ক্ষেত্রে উত্তরাধিকার আইন লাগু হবে না। তিনি বলেন, বিলটি যখন ২০১০ সালে প্রথম আনা হয়েছিল, তখনই পাশ হওয়া উচিত ছিল।


এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, রাজা মহম্মদ আমির মহম্মদ খানের (যিনি মাহমুদাবাদের রাজা বলে পরিচিত) উত্তরাধিকারীরা উত্তরাখণ্ড ও উত্তরপ্রদেশে ছড়িয়ে থাকা বিস্তীর্ণ সম্পত্তির দাবি করে বসেন। বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।


এই মামলার পরই, বিলকে নতুন করে পেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। যদিও, বিলের বিরোধিতা করে কয়েকজন সাংসদ প্রশ্ন করেন, বিলের ফলে আখেরে প্রকৃত বিচার ও মানবাধিকার খর্ব হবে। পাল্টা যুক্তি দেখিয়ে রাজনাথ বলেন, পাকিস্তান ভারতের বিপুল ভূমিতে কব্জা করেছে। ভারতও তাই করলে, সেটাই হবে প্রকত বিচার।