নয়াদিল্লি:  বিরোধী শূন্য সংসদে পাস হয়ে গেল আরও এক বিতর্কিত বিল!কৃষি বিলের পর এই শ্রম বিলকেও ঐতিহাসিক আখ্যা দিলেন মোদি সরকারের মন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদরা! আর সংসদের বাইরে বিক্ষোভরত বিরোধী দলের সাংসদরা দাবি করলেন, এর ফলে কোম্পানিগুলির পক্ষে কর্মী ছাঁটাই করা আরও সহজ হয়ে গেল!


শিল্পে শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক বিধি,সামাজিক সুরক্ষা বিধি এবং কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চয়তা বিধি। বুধবার লোকসভায় এই তিনটি বিল পাস হল!

মোদি সরকারের পাস করা এই বিল অনুযায়ী,এতদিন ১০০ জন পর্যন্ত কর্মীর সংস্থায় ছাঁটাই করতে কিংবা ব্যবসা বন্ধ করতে সরকারি অনুমতি লাগত না।

মোদি সরকার সেটা বাড়িয়ে ৩০০ করে দিল।

বিরোধীদের দাবি, ভেঙে পড়া অর্থব্যবস্থা, আকাশছোঁয়া বেকারত্ব, লকডাউনের জেরে কোটি কোটি চাকরি যাওয়ার মধ্যেই, তড়িঘড়ি এই বিল পাস করে, আসলে মালিকপক্ষের হাতই আরও শক্ত করল মোদি সরকার। তাদের প্রশ্ন,এমনিতেই যখন চাকরি কমে যাচ্ছে, তখন কোন যুক্তিতে সরকার অবাধ ছাঁটাইয়ের রাস্তা মসৃণ করল?কোন অজ্ঞাত কারণে, শিক্ষা বিল, কৃষি বিল, শ্রম বিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস করানোর ক্ষেত্রে এত তাড়াহুড়ো করল মোদি সরকার?কাদের স্বার্থে করোনা সঙ্কটের মধ্যেই এভাবে তাড়াহুড়ো করে মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি পাস করিয়ে নিচ্ছে কেন্দ্র? মোদি সরকারের শ্রম বিলে কর্মী ছাঁড়াইয়ের পথ প্রশস্ত করা হলেও, বেকার ভাতা কিংবা বিমার মতো বিষয় সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে নেই কেন?

উল্টোদিকে বিল পাস করানোর ক্ষেত্রে সরকারের দাবি হল,এর ফলে শ্রমিকরা আরও বেশি করে সামাজিক সুরক্ষা কবচ পাবেন।বিদেশি বিনিয়োগ টানতে সুবিধা হবে। এর জেরে কর্মসংস্থান বাড়বে।

শ্রমমন্ত্রীর দাবি, কর্মী-স্বার্থ মাথায় রেখে ঠিকা নিয়োগেও স্থায়ী চাকরির সমান সুবিধার কথা লেখা রয়েছে এই বিলে।আরও ভাল পরিবেশে কাজ করতে পারবেন শ্রমিকরা।

এছাড়াও কেন্দ্রের যুক্তি, দেশের ১৬টি রাজ্য ইতিমধ্যেই তিনশো পর্যন্ত কর্মী কাজ করেন, এমন শিল্প সংস্থায় সরকারের অনুমতি ছাড়াই সংস্থা বন্ধ করা, ইচ্ছে মতো নিয়োগ ও ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে।

প্রত্যাশিতভাবেই বণিক সভাগুলি মোদি সরকারের শ্রম বিলকে স্বাগত জানিয়েছে।

উল্টোদিকে আরএসএস-এর শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ সমেত অধিকাংশ শ্রমিক সংগঠনগুলিই এই বিলের প্রতিবাদে সরব হয়েছে।

কেন্দ্রের পাস করা এই বিলে আরও বলা হয়েছে,৬০ দিনের আগাম নোটিস ছাড়া কোনও শ্রমিক ধর্মঘট করতে পারবে না। এত দিন এই নিয়ম শুধুমাত্র জল, বিদ্যুৎ, প্রাকৃতিক গ্যাস, টেলিফোনের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পরিষেবার ক্ষেত্রে চালু ছিল।

উল্লেখ্য, এদিনই নির্ধারিত সময়ের আটদিন আগে অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি করা হল সংসদের বাদল অধিবেশন। এই অধিবেশনে ২৫ টি বিল পাশ হয়েছে।