নয়াদিল্লি: এবার থেকে ৫০ কোটি টাকা ও তার বেশি ব্যাঙ্ক লোন নিতে গেলে ঋণগ্রহীতার পাসপোর্টের বিস্তারিত তথ্য জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হল। ব্যাঙ্ক থেকে বড় অঙ্কের লোন নিয়ে শোধ না করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতেই এমন পদক্ষেপ। পাসপোর্টের যাবতীয় তথ্য ব্যাঙ্কের কাছে থাকায় তারা ঋণ জালিয়াতি ঠেকাতে সময়মতো ব্যবস্থা নিতে পারবে, লোন নেওয়া লোক দেশ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে জানতে পারলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও সতর্ক করে দিতে পারবে।
হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী ও তাঁর মামা মেহুল চোকসি পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) বিপুল পরিমাণ লোন শোধ না করে দেশ ছেড়েছেন। সেই প্রেক্ষাপটে আজ কেন্দ্রীয় অর্থসচিব রাজীব কুমার ট্যুইট করেন, স্বচ্ছ, দায়িত্বশীল ব্যাঙ্কিংয়ের জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ। ৫০ কোটির বেশি লোনের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আবশ্যিক। জালিয়াতির ক্ষেত্রে দ্রুত প্রতিক্রিয়া সুনিশ্চিত হবে এতে।
ইতিমধ্যে যাঁরা ৫০ কোটি টাকার বেশি লোন নিয়েছেন, তাঁদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ৪৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে জোগাড় করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এতদিন পাসপোর্টের তথ্য না থাকায় ব্যাঙ্কগুলি বিরাট অঙ্কের লোন নিয়ে ফাঁকি দেওয়া লোকজন, বিশেষত ঋণগ্রহীতাদের দেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারছিল না।
শুধু নীরব, মেহুলই নন, বিজয় মাল্য, যতীন মেহতার মতো লোকজন সরকারি ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া বিপুল ঋণ বকেয়া রেখে দেশ ছেড়েছেন। গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ফিউজিটিভ ইকনমিক অফেন্ডার্স বিল অনুমোদন করেছে, যাতে ভবিষ্যতে নীরব মোদীর মতো পালিয়ে যাওয়া লোকজনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে, বেচে দিয়ে অনাদায়ী ঋণ পুনরুদ্ধারের সংস্থান রয়েছে। যাঁরা ১০০ কোটি বা তার বেশি ঋণ বকেয়া রেখে পালিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হবে। নীরব, মেহুল পিএনবি-কে ১২৭০০ কোটি টাকা প্রতারণা করে দেশ ছেড়েছেন, তদন্তকারী এজেন্সিগুলির সঙ্গেও সহযোগিতা করছেন না।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে সাফসুতরো করতে গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কগুলিকে ৫০ কোটি টাকার বেশি সব নন পারফর্মিং অ্যাসেট (এনপিএ) অ্যাকাউন্টকে সম্ভাব্য জালিয়াতি হিসাবে ধরে তদন্ত করে সিবিআইকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে। তাছাড়া তারা ব্যাঙ্কগুলিকে ২৫০ কোটি টাকার বেশি সব লোনের ওপর মনিটরিং করতে বলে, আরও বলে, যখনই নজরে পড়বে যে, লোনের মূল শর্তগুলি মানা হচ্ছে না, সঙ্গে সঙ্গে জানাতে হবে।