নয়াদিল্লি ও গুয়াহাটি: উত্তর-পূর্ব ভারতের বন্যা-পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলে দিলেন সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাসও।
প্রতিমাসে প্রত্যেক রাজ্যের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে টেলি-কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই অসম সহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়ালের সঙ্গে বন্যা-পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তারপরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা উত্তর-পূর্বের সাংসদ কিরেণ রিজিজুকে মোদী নির্দেশ দিয়েছেন, ব্যক্তিগতভাবে বন্যা-পীড়িত মানুষদের উদ্ধার ও ত্রাণের কাজে পরিচালনা করতে এবং সর্বান্তকরণ সাহায্য করতে।
https://twitter.com/narendramodi/status/885084108946321410
https://twitter.com/narendramodi/status/885084305944399873
https://twitter.com/narendramodi/status/885084683003998208
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই বৃহস্পতিবার আকাশপথে অসমের বন্যা-কবলিত জেলাগুলির পরিদর্শন করেন। তাঁকে সঙ্গ দেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় পরিচালন পর্ষদ (এনডিএমএ) ও নীতি আয়োগের কর্তাব্যক্তিরা।
অসমে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লখিমপুর জেলা। এদিন সেখানে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন রিজিজু। পাসনোই-বাওলিদান গ্রাম পরিদর্শন করেন। গত ২ দিনে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও, ব্রহ্মপুত্র ও তার শাখা-প্রশাখাগুলি এখনও বিপদসীমার ওপরে বইছে।
পাশাপাশি, ইয়াজুলির নীপকো বাঁধ থেকে বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ায় রঙ্গনদী, দিকতিং ও সিংরা নদীর জলও ফুলে ফেঁপে উঠেছে বলে আধিকারিকরা জানান রিজিজুকে। যার ফলস্বরূপ, বন্যার ফলে অসমের প্রায় ৪৩১টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যে প্রভাবিত হয়েছেন প্রায় ১৭ লক্ষ। শুধুমাত্র লখিমপুরেই ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা প্রায় সওয়া তিন লক্ষ।
https://twitter.com/JPNadda/status/885183634260545536
https://twitter.com/sarbanandsonwal/status/885166342378311683
একইসঙ্গে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকও। ইতিমধ্যেই, লখিমপুরে ২০টি ত্রাণ শিবির ও ২০৫টি স্বাস্থ্য শিবির গঠন করা হয়েছে। এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নাড্ডা মন্ত্রকের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ বজায় রাখতে।
https://twitter.com/narendramodi/status/885130858922782720
এদিন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন নাড্ডা। বন্যা-পরিস্থিতির সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। জানা গিয়েছে. এখনও পর্যন্ত রাজ্যে বন্যার বলি হয়েছেন ৪৫ জন।
শুধু অসম নয়, বন্যার প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্ত অরুণাচল প্রদেশের মানুষও। এদিন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খাণ্ডুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহও।
https://twitter.com/narendramodi/status/885084441907011584
জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিনের ক্রমাগত বৃষ্টিতে বন্যা ও ধসের ফলে রাজ্যের বহু জেলা গোটা দেশের সঙ্গে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাজ্যের মূল লাইফলাইন ৪১৫ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রবেশপথ পুরোপুরি ধুয়ে গিয়েছে। জলঙ্গের বিকল্প পথটিও আটকে রয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদে নিয়ে যেতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন খাণ্ডু। তাঁদের খাবার, ওষুধ, স্বাস্থ্য পরিষেবা, পানীয় জল থেকে শুরু করে সবরকম অত্যাবশ্যক জিনিস প্রদান করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সাগালিতে ২০ কুইন্টাল খাদ্যশস্য আকাশপথে পাঠানো হয়েছে।