নয়াদিল্লি: সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি মাঝারি পাল্লার ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র "আকাশ" মিসাইল সিস্টেম রফতানি করতে চলেছে ভারত। এর জন্য প্রয়োজনীয় সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।


বৃহস্পচিবার টুইট করে একথা জানালেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি লিখেছেন, আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের অধীনে বিবিধ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি এবং ক্ষেপণাস্ত্র বানানোয় সক্ষম হয়ে উঠছে ভারত। প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতেই মন্ত্রিসভা ‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি রফতানিতে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।





টুইটারে রাজনাথ আরও লেখেন, “অত্যাধুনিক হাতিয়ার রফতানি করতে উদ্যোগী হয়েছে ভারত সরকার। অস্ত্র রফতানির মাধ্যমে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা) আয়ের লক্ষমাত্রা রয়েছে। পাশাপাশি, বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করাও সরকারের উদ্দেশ্য। এখনও পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে শুধুমাত্র যন্ত্রাংশ রফতানি করত ভারত। কিন্তু আকাশ মিসাইল নিয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতীয় হাতিয়ারকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সুবিধা করে দেবে।”





এদিকে, বিশ্লেষকদের মতে, আকাশ মিসাইল রফতানি করলেও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হতে গেলে ভারতকে অনেকটা পথ চলতে হবে।


প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানিয়েছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র ৯৬ শতাংশ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত। সূত্রের খবর, ভিয়েতনামের হাতে আকাশ মিসাইল সিস্টেম তুলে দেওয়া নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা চলছে।


মাটি থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় শত্রুর যুদ্ধবিমান, কপ্টার বা ড্রোনকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারে এই ভারতীয় মিসাইল। এর আগে ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ও বরুণাস্ত্র অ্যান্টি-সাবমেরিন টর্পেডোও ভারত দিতে চেয়েছে ভিয়েতনামকে।


২০১৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থলসেনা ও বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত হয় আকাশ মিসাইল সিস্টেম। এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মোস-এর মতোই সুপারসনিক। এর সর্বাধিক গতি হল ২.৫ ম্যাক (৩০৮৭ কিমি প্রতি ঘণ্টা)-- অর্থাৎ শব্দের গতির প্রায় আড়াই গুণ।





এটি মাঝারি পাল্লার মিসাইল, যেটা ২৫ কিমি পর্যন্ত দূরে থাকা লক্ষ্যকে সহজেই ধ্বংস করতে পারবে। ৬০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম আকাশ মিসাইল। এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি যুদ্ধবিমান, ড্রোন, ক্রুজ মিসাইল নিমেষে ধ্বংস করতে সক্ষম।


এতদিন শুধুমাত্র যন্ত্রাংশ রফতানি করাতেই সীমাবদ্ধ ছিল ভারত। কিন্তু এবার গোটা মিসাইল সিস্টেম রফতানি করার ক্ষমতা অর্জন করল। জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত প্রতিরক্ষা বিভাগের পণ্যে উন্নতি ঘটাবে এবং বিশ্ববাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সুবিধা করে দেবে।