নয়াদিল্লি: দুদিনের চিন সফরে রওনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উহানে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাঁর একান্তে বৈঠক হওয়ার কথা। রওনা দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী জানান, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদী ও কৌশলগত দিকগুলির উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হবে। ডোকালাম হোক বা ব্রহ্মপুত্র—সীমান্ত সহ একাধিক বিষয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে সাম্প্রতিক অতীতে। সেই দিক দিয়ে মোদীর এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
এদিন চিনে পাড়ি দেওয়ার আগে, মোদী বিশেষ কোনও ইস্যু নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। শুধু বলেন, প্রেসিডেন্ট শি-র সঙ্গে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আমরা নিজেদের মত ও দৃষ্টিভঙ্গি একে অপরের সামনে তুলে ধরব। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির বিচারে জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে লাভবান বিষয়গুলি আলোচনায় উঠে আসবে। তিনি যোগ করেন, ভারত-চিন সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদী ও কৌশলগত উন্নয়ন নিয়েও পর্যালোচনা হবে।
মোদী-শি’র এই আসন্ন বৈঠককে অবশ্য ঘরোয়া বলে উল্লেখ করেছে বেজিং। চিনা উপ-বিদেশমন্ত্রী কং শুয়ানয়ু মঙ্গলবার জানিয়েছেন, কোনও বিশেষ ইস্যু নয়, সার্বিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়েই কথা হবে। মূল লক্ষ্য, উভয় দেশের মধ্যে আস্থাভাজন বৃদ্ধি ও বিবাদমান ইস্যুতে সহমতে পৌঁছনো। ডোকলাম-বিতর্ক থেকে শুরু করে ভারতের দাবি মেনে জয়েশ-ই-মহম্মদ প্রধান আজহার মাহমুদকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা বা নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের অন্তর্ভু্ক্তি আটকে দেওয়া—সাম্প্রতীক অতীতে ভারত ও চিনের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলেছে। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, এই সব নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
এদিকে, বেজিং সূত্রে খবর, উহানে যে জায়গায় বৈঠক হবে, তা একসময় চিনের কিংবদন্তি নেতা মাও জেদঙের অত্যন্ত পছন্দের অবসর কাটানোর জায়গা ছিল। ২০১৪ সালে গুজরাতে সবরমতী আশ্রমে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে এমনই ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন মোদী। চিনা উপ-বিদেশমন্ত্রী জানান, এবার শি জিনপিংয়ের আপ্যায়ণের পালা। তাঁর দাবি, ইয়াংজি নদের ধারে মাও জেদংয়ের ওই সুন্দর ভিলায় এই বৈঠক হবে। বর্তমানে ভিলাটি একটি সংগ্রহশালায় রূপান্তরিত। মোদীকে সেখানে ঘুরে দেখাবেন শি। তাঁর দাবি, এধরনের বৈঠক সাধারণত করে থাকেন না চিনা রাষ্ট্রনেতারা।