জয়সলমীর: নিজের সীমান্ত সুরক্ষিত করতে সক্ষম ভারতীয় সেনাবাহিনী। তাঁদের সাহসিকতার জন্য গর্বিত গোটা দেশ। দীপাবলি উপলক্ষে জয়সলমীরে সেনাবাহিনীর সদস্যদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে এই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার জয়সলমীরের লোঙ্গেওয়ালা সেনা শিবিরে জওয়ান ও আধিকারিকদের উদ্দেশে ভাষণ দেন মোদী। তিনি বলেন, ‘সীমান্ত সুরক্ষিত রাখায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর সাহসিকতার জন্য গর্বিত ভারত। লোঙ্গেওয়ালার যুদ্ধ ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

দেশের নিরাপত্তায় সীমান্ত সুরক্ষায় নিয়োজিত সেনা সদস্যদের পরিবারের উদ্দেশেও এ দিন অভিনন্দন বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সৈনিক পরিবারের সামনে আমি নতজানু হচ্ছি। ২০১৪ সালে সিয়াচেনে দীপাবলি উদযাপন করেছিলাম। অনেকেই তখন অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু আপনারা আমায় চেনেন, উৎসবে আমি সব সময় আপনজনদের সঙ্গে থাকতে ভালোবাসি। এ বছরেও সেই ঐতিহ্যই পালন করছি।’ এ দিন সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য দীপাবলি উপলক্ষে মিষ্টি উপহার দেন মোদী।

লোঙ্গেওয়ালায় গ্রীষ্মে তাপমাত্র ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছয় আর শীতে শূন্য ডিগ্রির নীচে নামে। তাই এ দিন প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘মে মাসে এখানে বহু মানুষ সান স্ট্রোকে কাবু হয়ে পড়েন। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও আপনারা কর্তব্যে অবিচল থেকেছেন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই আমাদের সেনার সাহসিকতা নিয়ে কথা উঠবে, তখনই লোঙ্গেওয়ালার যুদ্ধের কথা স্মরণে আসবে। সেই যুদ্ধে পাকিস্তানি সৈন্যদের সমুচিত জবাব দিয়েছিল আমাদের সেনাবাহিনী। ওই যুদ্ধ প্রমাণ করেছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌসেনা ও বায়ুসেনার সম্মিলিত শক্তির সামনে কোনও আক্রমণই ধোপে টেকে না।’



গালওয়ান সীমান্তে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষের পর চিনা পণ্য বয়কট করার আহ্বান করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে আত্মনির্ভর হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। এদিন তিনি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যুদ্ধট্যাঙ্ক অর্জুনে সওয়ার হন। তারপরই মোদীর হুঁশিয়ারি, ‘‘সীমান্তে কেউ আমাদের শক্তি পরীক্ষা করলে, যথাযথ উত্তর পাবে।’’ শুক্রবারই সীমান্তে পাক সেনার হামলায় প্রাণ যায় ১১ ভারতীয়ের।তার পরের দিনই জওয়ানদের মাঝে গিয়ে মোদি বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, ছেড়ে কথা বলবে না ভারতও। তিনি এদিন বলেন, ‘‘একাধিক দেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও লঙ্গেওয়ালার নাম সারা দেশের মানুষের মুখে মুখে ফেরে। লঙ্গেওয়ালার লড়াইয়ের ইতিহাস প্রত্যেক ভারতীয়ের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। সবাই জানে, ‘জো বলে সো নিহাল, সৎ শ্রী আকাল’ ধ্বনির কথা।’’ মোদী আসলে ১৯৭১ সালের ভারত-পাক লড়াইয়ের প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দিতে চাইছেন। পরের বছরই সেই ঐতিহাসিক ঘটনার ৫০ বছর পূর্ণ হবে।

মোদী বলেন, ‘‘দীপাবলির মতো সামাজিক উৎসবে মানুষ পরিবারের সঙ্গে কাটাতে ভালবাসেন। এই সময়টায় কাছের মানুষদের সঙ্গে থাকেন সবাই। তাই প্রতি বছর আমি আপনাদের সঙ্গে সময় কাটাই, কারণ আপনারাই আমার পরিবার।’’ পাশাপাশি চিনকে ঘুরিয়ে বিস্তারবাদী বলে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী। নাম না করে কটাক্ষ করলেন, মানসিক সমস্যায় জর্জরিত চিন।