নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিলকে যজ্ঞ আখ্যা দিয়েছিলেন। এবার মোদীর মুখের কথা কেড়েই তাঁকে কটাক্ষ করলেন কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী। তিনি বলেছেন, মোদী তাঁর যজ্ঞে কৃষকদের জীবন আহুতি দিয়েছেন।

রাহুল বলেছেন, মোদীজী, ‘আপনি আপনার নোট বাতিল যজ্ঞে ভারতীয় কৃষকদের আহুতি দিয়েছেন। তাঁদের হাতে থাকা নগদকে ছাইয়ে পরিণত করেছেন’।

রাজস্থানের বারনে এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাহুল দাবি করেছেন, দেশের কৃষকরা প্রতিদিন আত্মহত্যা করছেন। কিন্তু সরকার তাঁদের দাবির প্রতি কর্ণপাতই করছে না। কংগ্রেস সহ সভাপতি আরও অভিযোগ করেছেন, সরকার কৃষকদের জমি কেড়ে নিতে চাইছে। তাঁর অভিযোগ, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগঢ়- যে রাজ্যেই বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে সেখানেই কৃষক ও আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

রাহুলের দাবি, কংগ্রেস কৃষকদের স্বার্থরক্ষার চেষ্টা করে এসেছে। কৃষকরা যাতে জমির ন্যায্যমূল্য পায়, সেজন্য কংগ্রেস জমি অধিগ্রহণ বিল পেশ করেছিল। কিন্তু মোদীজী তিন-তিন-তিনবার অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে ওই বিল আটকে রাখার চেষ্টা করেছেন।

রাহুল তাঁর ভাষণে রাজ্যের বসুন্ধরা রাজে সরকারেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন।

নোট বাতিল নিয়ে রাহুল আগের মতোই এদিনও কড়া সুরে মোদীকে আক্রমণ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, নোট বাতিলের মাধ্যমে মোদী দেশের জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ অতিধনীদেরই সাহায্য করেছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, এই ধনী লোকজন তাঁদের কালো টাকা নগদে রাখেন না।

রাহুল বলেছেন, ভারতীয় চোরেরা মহা ধড়িবাজ। তারা তাদের কালো টাকা নগদে লুকিয়ে রাখে না। তারা সম্পত্তি, গয়না, ও সুইস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ওই টাকা সরিয়ে ফেলে।

এ প্রসঙ্গে রাহুল প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মোদী কালো টাকা ফিরিয়ে এনে গরিবদের মধ্যে তা বিলিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। এখন তিনি তাঁর সুর পাল্টে ফেলেছেন। তাঁর প্রশ্ন, মোদী সংসদে কেন সুইস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টকারীদের নাম প্রকাশ করেননি।

রাহুল মোদীর নগদহীন লেনদেনের পরিকল্পনাকেও কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেছেন পেটিএম মানে ‘পে টু মোদী’।

একইসঙ্গে মোদীর ‘ব্যক্তিগত দুর্নীতি’র অভিযোগ নিয়ে এদিনও সোচ্চার হয়েছেন রাহুল। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে নিয়ে যত খুশি রসিকতা করুন, কিন্তু গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে তাঁর বিরুদ্ধে কর্পোরেট হাউসগুলির কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তার জবাব প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হবে।