নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের আকাশপথে বিসকেক যাচ্ছেন না নরেন্দ্র মোদি। বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, পাকিস্তানকে এড়িয়ে ওমান, ইরান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলির আকাশপথ ব্যবহার করে বিমানে বিসকেক যাচ্ছেন তিনি। চলতি সপ্তাহে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর সামিটে যোগদানের জন্য কিরঘিজস্তানের রাজধানী বিসকেকে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ২ দিনের সফরে আজই যাত্রা তাঁর। পাকিস্তান ‘নীতিগত ভাবে’ মোদির বিমানকে তাদের আকাশপথ ব্যবহার করতে দিতে সম্মত বলে গতকাল জানান সে সেদেশের জনৈক শীর্ষ কূটনীতিক। ভারতের পক্ষ থেকে মোদির বিমান যাতে তাদের আকাশ ব্যবহার করে বিসকেক যেতে পারে, সেজন্য পাকিস্তানকে অনুরোধ করা হলে তারা ইতিবাচক মনোভাব দেখায়। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই রুটে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ কোন রাস্তা ধরে প্রধানমন্ত্রীর বিমান যাবে, প্রশ্ন করা হলে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রভিশ কুমার বলেন, ভারত সরকার ভিভিআইপি বিমানের বিসকেক যাওয়ার জন্য দুটি রাস্তা খতিয়ে দেখেছে। ঠিক হয়েছে, ভিভিআইপি বিমান ওমান, ইরান ও মধ্য এশিয় দেশগুলির মধ্য দিয়ে বিসকেক যাবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এসসিও শীর্ষ বৈঠকে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, পুলওয়ামাকাণ্ডের পর বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষণ ঘাঁটির ওপর ভারতীয় বায়ুসেনার হামলার জেরে ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান তাদের আকাশপথ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে মোট ১১টির মধ্যে শুধুমাত্র দুটি রুট খুলেছে তারা। দুটিই গিয়েছে দক্ষিণ পাকিস্তান দিয়ে। ওগুলি বাদে বাকি সব রুটই বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের জন্য বন্ধ রয়েছে।
পাক অফিসারটি সোমবার জানান, ইমরান খানের সরকার পাকিস্তানের আকাশপথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিমানকে বিসকেক যাওয়ার অনুমতি দিতে ভারতের অনুরোধে নীতিগত ভাবে রাজি হয়েছে। ইমরান সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে পাকিস্তান কাশ্মীর সমেত দুটি দেশের মধ্যে বকেয়া যাবতীয় ভূ-রাজনৈতিক ইস্যুর সমাধান চায় বলে জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন অফিসারটি। এও বলেন, এসসিও সম্মেলনের ফাঁকে মোদি, ইমরানের বৈঠক না হলেও পাকিস্তান আশাবাদী যে, ভারত তার শান্তি প্রস্তাবে সাড়া দেবে। প্রসঙ্গত, ভারতের বরাবরের স্পষ্ট অবস্থান হল, আলোচনা আর সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না।
পাকিস্তান গত ২১ মে বিসকেকে এসসিও সদস্য দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলনে তত্কালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বিমানকেও তাদের আকাশপথ ব্যবহারের বিশেষ অনুমতি দিয়েছিল।
ভারতীয় বিমানবাহিনী গত ৩১ মে জানায়, বালাকোটের ঘটনার পর ভারতের আকাশপথে জারি হওয়া যাবতীয় সাময়িক নিষেঝাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে পাকিস্তান পাল্টা সদর্থক ব্যবস্থা না নিলে ও তাদের আকাশপথ পুরোপুরি খুলে না দিলে কোনও বাণিজ্যিক বিমান কোম্পানির তার সুবিধা পাবে না।