নয়াদিল্লি: সাধারণ বাজেটকে ‘আধুনিক’ বলে অভিহিত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর মতে, গরিব, কৃষক এবং দুঃস্থ সহ সমাজের প্রত্যেক শ্রেণির ‘স্বপ্ন’-কে পূর্ণ করতে অগ্রণী ভূমিকা নেবে এই বাজেট। একইসঙ্গে কর্মসংস্থান, স্বচ্ছতা, নগর ও গ্রামোন্নয়নের ওপর নজর দেবে এই বাজেট।


প্রধানমন্ত্রীর মতে, গত আড়াই বছর সরকার যা যা কাজ করেছে এবং আগামীদিনে দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারের যা যা ভাবনা রয়েছে—এই দুয়ের মধ্যে সেতুবন্ধন করবে এবারের বাজেট। তিনি বলেন, এটা কৃষক, দুঃস্থ, স্বচ্ছতা, নগর ও গ্রামোন্নয়ন এবং উদ্যোগের ভবিষ্যতের বাজেট।


এদিন ‘ভাল’ বাজেট পেশ করার জন্য তিনি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির প্রশংসা করেন। মোদীর মতে, এই বাজেটের ফলে দেশের উন্নয়নে জোয়ার আসবে, নতুন কর্মসংস্থান সুযোগ উন্মোচিত হবে এবং কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে।


মোদীর দাবি, বাজেটের ফলে একদিকে যেমন গ্রামগুলির অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে, তেমনই কোনও আর্থিক ঘাটতি ছাড়াই মধ্যবিত্তের আয় বাড়বে। বাজেটের ফলে স্বল্প আয় শ্রেণির মানুষদের লাভ হবে। তিনি যোগ করেন, এবারের বাজেটে কৃষক, কৃষি, গ্রাম, দলিত, শোষিতদের ওপর নজর দেওয়া হয়েছে।


মোদী বলেন, আধুনিকীকরণ থেকে আর্থিক সংস্কার, শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, এবং উদ্যোগ থেকে শিল্প—এবারের বাজেটের মাধ্যমে সব বিষয়ে সরকারের স্বপ্ন বাস্তব হওয়ার দিশা দেখা গিয়েছে। মোদী এদিন মনো করিয়ে দেন, এবারের বাজেটে গ্রামীণ স্বরোজগার যোজনা এবং নারী কল্যা খাতে রেকর্ড পরিমাণ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।


একইসঙ্গে, মোদী আরও দাবি করেন, কালো টাকা ও দুর্নীতিদমনে সরকার কতটা সচেষ্ট, এবারের বাজেটে তা প্রতিফলিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাজেটে ডিজিটাল অর্থনীতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। যার ফলে, কর ফাঁকি দেওয়া ও কালো টাকা প্রসার রুদ্ধ হবে।


এবারের বাজেট ঘোষণা অনুযায়ী, নগদে সর্বাধিক ২ হাজার টাকা পর্যন্ত অনুদান যে কোনও রাজনৈতিক দলকে দেওয়া যেতে পারে। এর বেশি অর্থ অনলাইন বা চেকে দিতে হবে। এই সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেন মোদী। বলেন, রাজনীতিকে দুর্নীতিমুক্ত করতে এটি এক অত্যন্ত বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।


বাজেটের প্রশংসা করেছে বিজেপিও। এদিন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বাজেটকে সার্বিক উন্নয়নমুখী হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, যুবসমাজ থেকে মহিলা, কৃষক, মধ্যবিত্ত ও গরিব শ্রেণি—সকলের জন্যই এই বাজেটে কিছু না কিছু রাখা হয়েছে।


শাহ বলেন, সার্বিক উন্নয়নমুখী বাজেট পেশ করা হয়েছে। একদিকে যেমন গ্রাম ও কৃষকদের বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে, তেমনই যুবসমাজকে নতুন সুযোগ দেওয়ার সংস্থান রাখা হয়েছে। একদিকে যেমন মধ্যবিত্তদের সুরাহা দেবে তেমনই গরিব ও নিম্নবিত্তদের স্বপ্নপূরণ করবে এই বাজেট।


এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির ভূয়সী প্রশংসা করে অমিত শাহ বলেন, বাজেটে গরিব ও দুঃস্থদের সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও সুলভে গৃহলাভের ওপর জোর দিয়ে দারুন কাজ করেছে সরকার। একইসঙ্গে, মধ্যবিত্তদের কর-সুরাহা দিয়ে দেশের অধিকাংশ মানুষকে স্বস্তি দিয়েছে এবারের বাজেট।


তিনি যোগ করেন, কৃষি ঋণ খাতে ১০ লক্ষ কোটি, ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পে ৫ হাজার কোটি এবং প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা – কৃষকদের সুবিধার্থে বিরাট ভূমিকা নেবে। অন্যদিকে, গ্রামীণ রোজগার যোজনা খাতে বরাদ্দ ৩৭ হাজার কোটি থেকে বা়ড়িয়ে ৪৮ হাজার কোটি করা হয়েছে। এর ফলে, গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের সম্পত্তি বৃদ্ধি পাবে।