নয়াদিল্লি: সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তিতে রোধ করার পাশাপাশি এবার পাকিস্তানকে দেওয়া মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন) বা সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত রাষ্ট্রের মর্যাদা প্রত্যাহার করার ভাবনাচিন্তা করছে ভারত।

কেন্দ্রীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই পাকিস্তানকে এমএফএন স্টেটাস নিয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

১৯৯৬ সালে পাকিস্তানকে এই বিশেষ তকমা দিয়েছিল ভারত। সেই সময় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লুটিও)-র অধীনস্থ জেনারেল এগ্রিমেন্ট অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্রেড (গ্যাট) চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তানকে এমএফএন তকমা দেওয়া হয়েছিল।

এর মাধ্যমে, শুভেচ্ছাবার্তা হিসেবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অঙ্গীকারবদ্ধ হয় ভারত। একইভাবে, এই চুক্তির ফলে ভারতকেও প্রাধানয দেওয়ার কথা পাকিস্তানের।

কিন্তু, পঠানকোট এবং উরিকাণ্ডের প্রেক্ষিতে এবার ইসলামাবাদের থেকে তা প্রত্যাহার করার কথা ভাবছে নয়াদিল্লি। এমনিতেই, সাম্প্রতিককালে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য অনেকটাই কমে গিয়েছে।

অ্যাসোচ্যামের পেশ করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে ভারতের মোট বিদেশে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তার মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ মাত্র ২.৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

পরিসংখ্যান বলছে, পাকিস্তানে ভারতের রফতানির পরিমাণ ২.১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর পাকিস্তান থেকে এসেছে মাত্র ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্যসামগ্রী।

ফলত, দুপক্ষের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ একেবারে তলানিতে এসে ঠেকায় এবার তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছিলই ভারত। তার ওপর বিভিন্ন জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে, সেই দাবি আরও জোরালো আকার ধারণ করেছে।

৫৬ বছরের সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তির পুনর্বিবেচনা করার জন্য দুদিন আগেই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন মোদী। সূত্রের খবর, সেখানে স্থির হয়, এবার থেকে পঞ্চনদীর জলকে বেশি ব্যবহার করে পাকিস্তানে যাওয়ার ওপর নয়ন্ত্রণ করবে ভারত।

ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতী. নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্কর, জলসম্পদ সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের শীর্ষ আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, সকলেই একবাক্যে স্বীকার করেন, পাকিস্তানের সঙ্গে জলবণ্টন নিয়ে আলোচনা একমাত্র সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশেই সম্ভব।